গত ৫ আগস্ট সংসদে ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর থেকেই কার্যত স্তব্ধ ভূস্বর্গ। এখনও বহু জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় মোদীর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন উপত্যকা। যার ফলে দেশ জুড়ে অনলাইনে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফর্ম জমা দেওয়া চললেও ফর্ম জমা করতে পারেছেন না কাশ্মীরের পড়ুয়ারা।
শ্রীনগরের শাদাব আহমেদ যেমন ধরেই নিয়েছিলেন, এ বছরটা গেল। তবে বহু কষ্টে ফর্ম জমা করার পর অবশেষে ফের হাসি ফুটেছে তাঁর মুখে। আসলে শাদাবের মতো জয়েন্ট-নেট-গেটের আরও বহু পরীক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াচ্ছে শহরের বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট ক্যাফে। পরীক্ষার্থীরা অফলাইনে ফর্ম ভরছেন। আর দিল্লী গিয়ে তা অনলাইনে জমা করে আসছেন ক্যাফে-কর্মীরা। ক্যাফের বাইরে তালা, তবু হজরতবাল এলাকার এক-একটা ক্যাফে রোজ অন্তত ৪০টা করে ফর্ম সংগ্রহ করে যাতায়াত করছে শ্রীনগর-দিল্লী।
প্রশাসন পাশে নেই। ৫০ দিনেরও বেশি চলতে থাকা অচলাবস্থায় ধুঁকছে জম্মু-কাশ্মীরের বড় অংশ। এখন তাই ‘সেল্ফ সার্ভিসেই’ আস্থা রাখছে উপত্যকা। শ্রীনগর হাইকোর্টে জমতে থাকা হেবিয়াস কর্পাস আর্জির দ্রুত শুনানির স্বার্থেও যেমন এগিয়ে এল বার অ্যাসোসিয়েশনই। আট আইনজীবীর একটি প্যানেল তৈরি করে বার জানিয়েছে, কেউ পিটিশন দায়ের করতে চাইলে এই আইনজীবীরাই আবেদনকারীদের হয়ে সওয়াল করবেন আদালতে।
জানা গেছে, হাইকোর্টে মামলার পাহাড় জমেছে। এর একটা বড় অংশই ‘জন নিরাপত্তা আইনে’ আটক কিংবা গ্রেফতারি মামলায় হেবিয়াস কর্পাস আর্জি। এবার বারের তৈরি করা প্যানেলের হাত ধরে ফের শুনানি শুরু হবে বলে আশাবাদী উপত্যকা। ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ধরপাকড় পর্বে বারের সিনিয়র সদস্যদেরও অনেকে আটক। বসির আহমেদ, মীর মাজিদ, জিয়া-উর রহমান, নাসীম কাদরিদের মতো আট জুনিয়র সদস্যকে দিয়েই তাই মামলা লড়তে চাইছে বার।
পড়ুয়াদের স্বার্থে লড়াইয়ের মাঠ ছাড়তে নারাজ শ্রীনগরের ক্যাফে মালিকেরাও। হজরতবালের মহম্মদ ইউনিস বলেন, ‘ফর্ম পূরণের জন্য তথ্য নিয়ে আমাদের ছেলেরাই দিল্লী যাচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের ফোনে ওটিপি এলে তা ফোনেই জেনে নিয়ে দিল্লিতে অনলাইনে ফর্ম জমা হচ্ছে।’ দিনে চল্লিশটা করে ফর্ম সংগ্রহ করলেও বহু পড়ুয়া লাইন থেকে ফিরে যাচ্ছেন বলেও জানালেন তিনি। ইউনিসের দাবি, এখন প্রশাসনের তরফে যদি নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ব্রডব্যান্ড চালু করা হয়, তা হলেও অনেকটা সমাধান হয়।