আসামে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। আতঙ্ক বাড়ছে এই রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও। এরই সঙ্গে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে বিজেপি নেতাদের ক্রমাগত হুঁশিয়ারি যে বাংলাতেও এনআরসি করা হবে। যথাযথ নথি না থাকলে নাগরিকত্ব হারানোর ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এনআরসি-তে নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন ৩ জন। এবার এনআরসি আতঙ্কে বসিরহাটে প্রাণ হারালেন এক মহিলা। জানা গেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তসলিমা বিবি।
বসিরহাটের হিঞ্জলগঞ্জের কাঁটাখালির বাসিন্দা তসলিমা বিবি। স্বামী ও তিন সন্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় বাস ওই মহিলার। মৃতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, এনআরসি আতঙ্কে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করার ফলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তসলিমা বিবির। স্বামী ও তিন সন্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় বাস ওই মহিলার। জানা গিয়েছে, ভোটার কার্ড-সহ অন্যান্য নথি থাকলেও তসলিমা বিবি, তাঁর স্বামী ও ১ ছেলের আধার কার্ড নেই। ফলে বাংলায় এনআরসি হবে এই খবর চাউর হতেই অন্যান্যদের মতোই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই মহিলাও।
জানা গেছে, শেষ কয়েকদিনে আধার কার্ডের জন্য বিডিও, পঞ্চায়েত অফিস-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে যান। কিন্তু তাতেও কার্যত কোনও লাভ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল আতঙ্কে ভুগছিলেন তসলিমা। এনআরসি হলে কী হবে, তা ভেবে প্রতিবেশীদের কাছে আতঙ্ক প্রকাশও করেন। পরে সোমবার দুপুরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে তাঁকে বসিরহাট হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বুধবার দুপুরে সেখানেই মৃত্যু হয় তসলিমা বিবির। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
এনআরসি-তে নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন ধূপগুড়ির বাসিন্দা শ্যামল রায়। ধুপগুড়ির পর এ বার জলপাইগুড়িতে আত্মঘাতী হলেন আরও একজন। এনআরসির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে না-পেরেই এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। কোচবিহারের কোতোয়ালিতেও এক মহিলা একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।