‘বেছে বেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে৷ শাসকদলের কর্মীদের হেনস্তা করা হচ্ছে৷ কিন্তু বিরোধী দলের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না৷’ বুধবার ডেবরার প্রশাসনিক সভায় এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বাংলাকে বিক্রী করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘বাংলা যেন না বিকোয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে’।
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/1186667338207755/
এদিন বৈঠকের শুরুতে নির্দিষ্ট সংখ্যা দিয়ে পূর্ত দপ্তরের কাজের এবং দুই জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পূর্ত দপ্তরের কাজ নিয়ে ৭০৬টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ পিডব্লুডি’র কাজে গাফিলতি হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ রাস্তাঘাট নিয়ে৷ ৩০৬টি অভিযোগ এসেছে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে৷ পুলিশের কাজে গাফিলতি রয়েছে৷ অভিযোগ জানাতে এলে সাধারণ মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে৷ ছ’মাসের তথ্য আমার কাছে রয়েছে৷’ অন্যদিকে পুলিশ-প্রশাসনের এই গাফিলতি আর বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ একহাত নেন মেদিনীপুরের আইসিকে৷ পাশাপাশি, ঘটাল, কেশপুর, পিংলা, পাঁশকুড়া ও বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রামের সীমান্তে অবস্থিত ঝিলিমিলি থানার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি৷ এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে বিডিওদেরও কাজ নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ‘বাংলা আবাস যোজনা লিখতে হবে৷ আবাস যোজনা লিখছেন না বিডিওরা৷ না লিখলে এবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ ঝাড়গ্রামের বিডিও অফিস থেকে বালি খাদান নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে৷ বিনপুর-১-এর বিডিওর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে’৷
নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড ও তাতে ভুল সংশোধনের সময়সীমা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, এদিন তাও সমাধান করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, ‘প্রথম ধাপে নতুন রেশন কার্ড ও সংশোধনের কাজ শেষ হবে ২৭ সেপ্টেম্বর৷ এরপর পুজো শুরু হয়ে যাবে৷ পুজোর পর আবার দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হবে ৫ নভেম্বর থেকে এবং চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত৷’ এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আবার এনআরসি ইস্যুতেও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে প্রশাসন ও দলীয় কর্মীরা যাতে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করেন, সেই পরামর্শ দেন৷ তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকায় নামের ভেরিফিকেশন চলছে৷ যারা ভোটার অফিসার রয়েছেন তারা অফিসে বসছেন না৷
আপনারা অফিসে বসুন৷ ভোটার তালিকায় মানুষকে নাম তুলতে সাহায্য করুন৷ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা পাঁচদিন পঞ্চায়েতে বসুন৷ দু’দিন মানুষের কাছে যান৷ বিডিও, বিধায়করাও মানুষের কাছে যান৷’ রেশন ও ভোটার কার্ডে নাম তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে জেলায় জাল এজেন্ট চক্র তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বিষয়টি পুলিশকে দেখার পরামর্শ দেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড করার নামে জাল এজেন্ট বেরিয়ে গিয়েছে৷ নাম তোলার জন্য বা সংশোধনের জন্য একা টাকা নিচ্ছে৷ এটা বেআইনি৷ পুলিশ নজরে রাখুন৷ এজেন্টরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়৷’