সপ্তাহ খানেক আগেই হিন্দী দিবসের দিন, ‘এক দেশ, এক ভাষা’ তত্ত্বের আমদানি করেছিলেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই ভারতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়ে পরোক্ষভাবে ‘এক দেশ, এক দল’-এর পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন। এবার ‘এক দেশ-এক কার্ড’-এর প্রস্তাব দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ! কিন্তু গোটা দেশে আধার কার্ডের তথ্য ফাঁস হওয়ার একাধিক অভিযোগ যেখানে প্রায়ই আসে, ফি দিন আমজনতার ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে ফাঁকা করে দেওয়া হয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সেখানে ওই কার্ড আদৌ কতটা সুরক্ষিত, সেই প্রশ্নই উঠেছে। বিশেষ করে কার্ডে যেখানে প্যান ও ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত তথ্য রাখার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে নিরাপত্তার প্রশ্নে কার্ড কতটা ভরসাযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে শুরুতেই।
প্রসঙ্গত, গতকাল আধার, প্যান, ভোটার, ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সব তথ্যের জন্য একাধিক কার্ডের পরিবর্তে একটি কার্ডেই সব তথ্য ধরে রাখার পক্ষে সওয়াল করেন শাহ। রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (আরজিআই)-এর নতুন ভবনের শিলান্যাসে এসে তিনি বলেন, ‘জনগণনার সময়ে কারও আধার, ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, প্যান বা ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তা কেবল একটি কার্ডে সংরক্ষিত করা সম্ভব।’ ওই ব্যবস্থা কার্যকর হলে বহু কার্ড নিয়ে ঘোরার প্রয়োজন পড়বে না। উল্লেখ্য, খুব দ্রুত ২০২১ সালের আদমশুমারির জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে মাঠে নামতে চলেছে আরজিআই-র প্রতিনিধিরা। তার আগে শাহের ওই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সরকারের পরিকল্পনা হল, এনপিআর ও আধার তথ্যের পাশাপাশি কোনও ব্যক্তির সামাজিক ও আর্থিক বিষয়ক সমস্ত তথ্যকে এক জায়গায় আনা। সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন শাহ। এর পাশাপাশি, আসন্ন জনগণনা খাতায়-কলমের পরবির্তে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যার জন্য ধার্য হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রশ্ন হল ওই কার্ড কতটা সুরক্ষিত? সাইবার বিশেষজ্ঞ কুমার বিক্রম সিংহের মতে, ‘আজকের দিনে হ্যাকাররা অত্যন্ত চালাক। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা যেমন যে কোনও একটি সিস্টেমের নিরাপত্তা বিধিকে পাশ কাটিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম, তেমনই কোনও ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট এক নিমেষে খালি করে দিতে পারে এরা। তাই গোটাটাই নির্ভর করছে কার্ডের নিরাপত্তার দিকটি কতটা সুরক্ষিত তার ওপরে।’