দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই আসামে প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। এর ফলে ‘নিজভূমে পরবাসী’ হয়েছেন ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। যার ১২ লক্ষই হিন্দু। এর পরেও হিন্দুদের রক্ষাকবচ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ঘাটতি নেই বিজেপির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ থেকে শুরু করে দলের সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব— অভয়বাণীতে কারও কার্পণ্য নেই কারও। কিন্তু বাস্তবে চলছে ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর পুলিশি সন্ত্রাস। মূলত বাঙালি হলেই হতে হচ্ছে বর্ডার পুলিশের হাতে হেনস্থার শিকার।
প্রসঙ্গত তালিকা প্রকাশ হলেও এখনও নাম বাদ পড়ার কারণ জানানো হয়নি আসামের এনআরসি-ছুটদের। নভেম্বরের আগে সেটা জানা সম্ভবও নয়। ফলে এখন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে যাওয়া অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে বাড়ছে বাঙালিদের ওপর পুলিশি জুলুম। শুক্রবার শিলচরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব এনআরসি নিয়ে অভয় দেন হিন্দুদের। শনিবার দিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহও জমিয়ত-উলেমা-ই-হিন্দ নেতাদের প্রতিশ্রুতি দেন, ধর্মের ভিত্তিতে কোনও ভারতীয়কে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন পড়ছে না।
আসাম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘আসামে বাঙালিদের ওপর হয়রানি দিন দিন বেড়েই চলেছে।’ আবার রবিবার ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘের সর্বভারতীয় সভাপতি সুখমান মকটন মন্তব্য করেছেন, ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে গিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করা গোর্খাদের পক্ষে অপমানজনক। আমরা যাব না। এনআরসি তালিকায় আমাদের বৈধ নাগরিকদের বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে মানহানির মামলা করার কথা বিবেচনা করছি।’ শুধু তাই নয় হিজড়া সম্প্রদায় থেকে শুরু করে শিলচরের পতিতাপল্লীর যৌনকর্মীদেরও নাম নেই এনআরসিতে। ফলে আসামে সর্বস্তরে এনআরসি নিয়ে ক্ষোভ দিন দিন আরও বেড়েই চলেছে।