চালু হওয়ার ১ মাসের মধ্যেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যজুড়ে। একের পর এক সমস্যার সমাধান, যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রত্যেককে সাহায্য প্রদানের জন্যই চালু হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচি। এবার সেটারই সুফল মিলল আবার। আর ‘দিদিকে বলো’রে সৌজন্যে বেঁচে গেল এক মা ও তাঁর সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির মালবাজারে।
জানা গেছে, এক অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলার হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। মা এবং গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচাতে হলে তখনই নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে। কিন্তু অমিল অ্যাম্বুল্যান্স। কী করা উচিত, তাও বুঝতে পারছিলেন না পরিজনেরা। ভাবনাচিন্তা ছাড়াই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করেছিলেন অন্তঃসত্ত্বার পরিজনেরা। আর তাতেই মিলল সুফল। পাওয়া গেল অ্যাম্বুল্যান্স। ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ফলে সুস্থ রয়েছেন মহিলা। ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানেরও জন্ম দিয়েছেন তিনি। পরিষেবা পেয়ে বেজায় খুশি ওই মহিলার পরিজনেরা।
লতিফা বানু নামে বছর একুশের ওই গৃহবধূ মালবাজারের মৌলানি বিদুরডাঙা এলাকার বাসিন্দা। দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আচমকাই শ্বাসকষ্ট হতে থাকে তাঁর। মহিলার দাদা মহম্মদ ফিরোজ ঠিক করেন তাঁর বোনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজে এদিক-সেদিক ফোন করেন গৃহবধূর পরিজনেরা। তবে সময় যত গড়াচ্ছিল, ততই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। অথচ মিলছিল না অ্যাম্বুল্যান্স। ক্রমশই বাড়ছিল পরিজনদের চিন্তা।
শেষ অবধি মহিলার দাদা আর দেরি না করে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির নম্বরে ফোন করেন। সঙ্গে সঙ্গে এক মহিলা ফোন ধরেন। ফোনের ওপ্রান্ত থেকে তিনি জানান, “এখনই অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হচ্ছে।” মাত্র ১০মিনিটের মধ্যে তাঁর বাড়িতে চলে আসে অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে চড়েই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে। বেশ কিছুক্ষণ চিকিৎসার পরেই এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। বর্তমানে সেই মহিলা এবং তাঁর সদ্যোজাত কন্যাসন্তান সুস্থ রয়েছেন।
লতিফার বাবা লতিফুল ইসলাম বলেন,”মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই। তাঁর জন্য আমার মেয়ে এবং নাতনি সুস্থ রয়েছে। সেই সময় অ্যাম্বুল্যান্স না পেলে বড় বিপদ হত। আমার মতো যাতে সবাই দিদির কাছ থেকে এরকম সাহায্য পায় সেই কামনা করি।” ওই মহিলার মা ফিরোজা বেগমের গলাতেও ধন্যবাদের সুর। তিনি বলেন, “আমরা খুব গরিব মানুষ। এক মেয়ে এবং এক ছেলে নিয়ে সংসার। দু’বছর আগে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে, কিছুদিনের জন্য বাড়িতে এসেছে। তার মধ্যেই ওর শ্বাসকষ্ট হয়। ‘দিদিকে বলো’র নম্বরে ফোন করার পর অ্যাম্বুল্যান্স পাই। শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়ে ওর চিকিৎসা করাই। আজ দিদির জন্য আমরা খুব ভাল আছি।”