গর্ব নিয়ে দেশে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচীর প্রচার চালান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আদতে এই নারী সুরক্ষা নিয়ে এত চিন্তা ভাবনা আদতে সবটাই ভ্রান্ত। তাই দেশে যখন বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও-এর প্রচার চলে তখনই মোদীর গড় গুজরাটের সুরাট উঠে এল সংবাদের শিরোনামে। না, নারী সুরক্ষা নিয়ে ইতিবাচক কোনও কাজের জন্যে নয়, বরং নারী নিগ্রহের এক পৈশাচিক ঘটনার সাক্ষী থাকল সুরাট। জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হল এক ধর্ষিতার নবজাতককে!এই নৃশংস কাজটি করেছে স্বয়ং ধর্ষক। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল দেশে নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ মোদী।
নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে স্থানীয় একটি খামারে তার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে প্রধান অভিযুক্ত রাথোড়। এরপর গত এক বছরে বেশ কয়েকবার সে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে বলে বয়ানে জানান নির্যাতিতার মা। এরপরই রাথোড় কথা দেয় সে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করবে। এরই মধ্যে ২০১৮ সালে নির্যাতিতা অভিযুক্তকে জানায় সে গর্ভবতী। তখন রাথোড তাকে বিয়ে করবে বলে ফের কথা দেয়। কিন্তু নির্যাতিতা যে গর্ভবতী হয়েছেন তা সেই সময়ে তাঁর মাকে লুকিয়ে যান।তিন মাস পর তার শরীরের বেশকিছু পরিবর্তন লক্ষ করে নির্যাতিরা মা। তখনই সে কান্নায় ভেঙে পড়ে সব কথা বলে। এই পরিস্থিতিতে তারা রাথোডের বাড়ি গিয়ে সব কথা জানান। কিন্তু সেই সময়ে রাথোড তার পরিবারের লোকেদের সামনে সব কথা অস্বীকার করে।
এর কিছুদিন পর চলতি বছরের জুন মাস নাগাদ রাথোডের মালিক মহেশ প্যাটেল নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলে তাঁর চিকিৎসা করাতে তাঁকে পাঠান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক অপর অভিযুক্ত গুজরাটির কাছে। সুরাটের সেই ক্লিনিকেই জন্মায় নির্যাতিতার এক পুত্র সন্তান। অভিযোগ চিকিৎসক গুজরাটি অভিযুক্তদের সঙ্গে মিলে নবজাতকে জীবন্ত জালিয়েছে। এর আগেও লিঙ্গনির্ধারণ করার অভিযোগে একবার গ্রেফতার করা হয়েছিল গুজরাটিকে। এরপরই পুলিশ চার জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এর ২,জে, এন ধারায় নাবালিকাকে ধর্ষণ, ৩১৫ নবজাতককে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা, এবং পকসো আইনে মামলা রুজু করে।
এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যে গত শনিবার অভিযুক্ত চার জন, যার মধ্যে আছে প্রধান অভিযুক্ত পেশায় টেম্পো চালক অশোক রাথোড, অশোকের মালিক মহেশ প্যাটেল, যার একটি ডেকরেটিং এর ব্যবসা আছে, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রাজেশ গুজরাটি এবং প্রধান অভিযুক্ত টেম্পো চালকের অপর বন্ধু জয়দ্বীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।