ব্যস্ত জীবনে এখন পুজো বলতে কুড়িয়ে কাচিয়ে ছোটবেলাকে খুঁজতে থাকা, কারোর কাছে হয়তো কিশোর বয়স পেড়িয়ে যৌবনের প্রথম প্রেম কিংবা কারোর কাছে চার দিনের নিপাট আড্ডায়, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে থেকে মুহুর্ত তৈরি করা। অক্সিজেন নেওয়া।
তবে একটা সময় ছিল যখন পুজো মানেই চাঁদা কাটতে যাওয়ার চিন্তা, হাজার কাজ তার মধ্যেও নিপাট আড্ডা হত, সে পুজোর বিল নিয়ে হোক কিংবা কারোর সদ্য প্রেম। প্যান্টের পকেটে স্মার্ট ফোনের বদলে ছিল কিছু খুচরো পয়সা। ঠোঁটের কোণে চারমিনার। তারপর দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। চাঁদার বদলে স্পনসরশিপ এসেছে। সাবেকি পুজোকে পিছনে ঠেলে এগিয়ে এসেছে থিমের পুজো।
বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী সার্বজনীন পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য পলাশ দে কথায় কথায় বললেন, “পুজো মানে তো আড্ডা। এখন আর আড্ডা মারার ফুরসত পাই না। রবিবারও হাজারটা কাজ। কিন্তু পুজোর আগে কয়েকটা রবিবার সকাল সকাল চলে আসি পাড়ায়। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়। পুজো তো উপলক্ষ্য মাত্র। আসল ব্যাপার রি-ইউনিয়ন”।
রাজনীতিতে ঘোর আড্ডাবাজ বলে পরিচিত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়েরও দুর্গাপুজোর আগের দিনে একবার অন্তত একডালিয়া এভারগ্রিন পুজো কমিটির অফিসে হাজির হওয়া চাই। নির্ভেজাল আড্ডা মারার জন্য। রবিবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, যথারীতি আড্ডার আসর জমে গেছে। সুব্রতর কথায়, “পুজো মণ্ডপে আড্ডা মারার আলাদা মজা আছে। চারদিন নিয়ম করে মণ্ডপে আসি। আর পুজোর আগে কয়েকটা রবিবারের আড্ডাও দারুণ জমে ওঠে। ছুটির দিন এলাকার পুরোনো ছেলেরা চলে আসে”। আসলে এই এগিয়ে যাওয়া সময়ে সমস্ত কিছু বদলালেও বদলায়নি পুজোর আড্ডাটুকু, ছোটবেলা, বড়বেলা মিলিয়ে থেকে যাওয়া বন্ধুত্ব গুলো।