বছর পরে ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরছে বলে কথা। হাতে আর বেশিদিন বাকি নেই। উমার আগমন বার্তায় ইতিমধ্যেই সাজো সাজো রব পড়ে গেছে চারিদিকে। তাই শেষ মুহূর্তের আয়োজনে কোনও খামতিই রাখতে চাইছে না শহরের পুজোগুলি। সর্বত্রই প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। সেই প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই মাত্র ২৭ বছরেই উত্তরের অন্যতম বড় পুজো রূপে আত্মপ্রকাশ করা কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীনও। এবারে তাদের থিম মূলত দুর্গাপুজোয় এলিয়েন বা ভিনগ্রহীদের উঁকি ঝুঁকি নিয়ে।

কী শুনেই চমকে গেলেন তো? হ্যাঁ এবার মা দুর্গার হাত ধরেই কুমোরটুলি পার্ক আগমন ঘটতে চলেছে এলিয়েন্সদের। ঠিক যেরকম ইসরো চন্দ্রযান-২ পাঠিয়েছে চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশ যান পাঠিয়েছে, কুমোরটুলি পার্কও ঠিক তেমনই ভীনগ্রহে রকেট পাঠাচ্ছে, এলিয়েনদের মধ্যে দুর্গাপুজোর উন্মাদনা কতখানি, তার খোঁজ করতে। সমগ্র ভাবনা ও রূপায়নে শিল্পী চন্দন পাল। প্রতিমা গড়ছেন নব পাল। মন্ডপের মূল আকর্ষণ এলিয়েন্স ওয়ার্ল্ড, সেখানকার পরিবেশ, জীবজন্তু, টেকনোলজি, ইউ-এফ-ও। থাকছে ‘মুভিং এলিয়েন মডেলস’ ও সেইসঙ্গে মিক্সড মেটেরিয়াল দিয়ে তৈরি ইউ-এফ-ও ককপিট। সেখান থেকেই সকল দর্শনার্থীকে দেবী দর্শন করতে হবে।

শিল্পী শ্রী চন্দন পাল বলেন, ইসরো যেরকম বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহে নিজেদের মহাকাশ যান পাঠিয়েছে ঠিক তেমনই কুমোরটুলি পার্ক এবার মহাকাশ যান পাঠাবে সেইসব গ্রহে, যেখানে মানুষ না থাকলেও রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব। সেই সব গ্রহের প্রাণীরাও কি আমাদের দুর্গাপুজো নিয়ে সমান উৎসাহী? যদি উৎসাহী হয় তবে তারা কীভাবে আমাদের প্রাণের দুর্গাপুজোকে দেখছে? এসব প্রশ্নেরই খোঁজ করবে সেই মহাকাশ যান। দর্শনার্থীরাও হবেন সেই মহাকাশ যানের সওয়ারি।

শিল্পীর কথায়, এবার আমাদের মন্ডপের মূল আকর্ষণ হল তাতে ৭ থেকে ১০টা এমন এলিয়েন থাকবে যেগুলো চলমান। এগুলি মূলত বাচ্চাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। মূলত বাচ্চাদের আনন্দ দেওয়ার জন্যই আমাদের মন্ডপে আমরা একটা কল্পজগৎ তৈরি করেছি। আমাদের এই পরিকল্পনাও আছে যে, বাচ্চারা যখন অধীর আগ্রহে কিউয়েতে দাঁড়িয়ে থাকবে, তখন জীবন্ত কিছু এলিয়েনরা যাতে তাদের হাতে উপহার স্বরূপ কিছু তুলে দিতে পারে। এতে ওই বিরক্তিকর পরিবেশ থেকে ওরা একটু স্বস্তিবোধ করতে পারে।

তিনি আরও জানান, মন্ডপের কাজ শুরু হয়েছে সেই ১৮ই জুলাই থেকে। বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ৩২-৩৩ জন শিল্পী এখানে কাজ করছেন। তার মধ্যেই কেউ আলোর দায়িত্বে আছেন, কেউ বা আবহর দায়িত্বে। আছেন এনিমেশন শিল্পীরাও। পুজোর আনুমানিক খরচ ৪০-৪৫ লাখ। এই মুহূর্তে মন্ডপ ও প্রতিমা গড়ার পাশাপাশি চলছে জোরকদমে এলিয়েন গড়ার কাজও। সবমিলিয়ে এবার পুজোয় অন্যতম চমক দিতে চলেছে কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীন, কারণ মানুষের পাশাপাশি এ পুজো দেখতে ভিড় করবে এলিয়েনরাও।
