কমিউনিস্ট পার্টিতে পূজার্চনা মহাপাপ৷ ঠাকুর-দেবতায় বিশ্বাস করেন না কমরেডরা৷ সাম্যবাদে ঈশ্বরের কোনও স্থান নেই৷ এই মতবাদেই এতকাল বিশ্বাস করতেন যে বামপন্থীরা, হঠাৎ তাঁদের হলটা কী? আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরের মতো এবারও দুর্গাপুজোয় গা ভাসাবেন কয়েকজন সিপিএম নেতা৷ যাঁদের মধ্যে অন্যতম উত্তর দমদমের বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য।
জানা গিয়েছে, নিজের বিধানসভা কেন্দ্রর এক বা একাধিক দুর্গাপুজো উদ্বোধনের আমন্ত্রণ পেয়েছেন এই দাপুটে সিপিএম নেতা এবং খুশি মনে সেই সমস্ত আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছেন তিনি৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তি বেড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতাদের৷ প্রশ্ন উঠেছে, সময়ের তাগিদে তবে কি এবার থেকে সরাসরি পুজোর উদ্বোধনেও যোগ দেবেন বাম নেতারা?
অন্যান্য ডানপন্থী দলগুলির মতোই জনসংযোগের এই রাস্তা অবলম্বন করবেন তাঁরা৷ যদিও বিষয়টিতে ভুল কিছু দেখছেন না তন্ময় ভট্টাচার্য৷ তিনি জানান, পুজো উদ্বোধনে কোথাও নিষেধ করা নেই। বাঙালির এই উৎসবে সবার অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে৷ এতে কোনও সমস্যা নেই৷ যদিও সজ্ঞানে এই ধরনের আমন্ত্রণ তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানান বিধানসভায় বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷
তিনি বলেন, ‘‘পুজো উদ্বোধনের আমন্ত্রণ অনেক আসে। তবে আমি এড়িয়ে যাই। কারণ এটা আমাদের পার্টির নীতিবিরুদ্ধ৷’’ অন্যদিকে, তন্ময় ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেছেন কামারহাটির সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়। ২০১৭-তে একসঙ্গে ২৫টি পুজো উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নিয়ে যিনি আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতাদের চরম অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন এবং এখনও যিনি অনেক পুজোর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যুক্ত৷
প্রসঙ্গত, তবে সিপিএম নেতাদের এই পুজোর ট্র্যাডিশনকে নতুন বলতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷ উদাহরণ স্বরূপ তাঁরা সবার প্রথমে তুলে ধরেছেন সুভাষ চক্রবর্তীকে৷ তারাপীঠে ‘জয় মা তারা’ রব তুলে, যিনি বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন পার্টি লাইনকে৷ বেশির ভাগ নেতা সরাসরি দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও, শহর থেকে জেলার প্রায় প্রতিটি পুজোতেই বামেদের বইয়ের স্টল চোখে পড়ে৷ আর এখন শুধু বইয়ের স্টল না, সরাসরি পুজো উদ্বোধনের সঙ্গেই যুক্ত হয়ে পড়ছেন কমরেডরা।