দেশ জুড়ে আর্থিক মন্দা। এর মধ্যেই সামনে এল শিশু অপুষ্টির ভয়াবহ চিত্র। ল্যান্সেটের রিপোর্টে জানা গেছে, ৬৮ শতাংশ শিশুই অপুষ্টিতে ভুগছে।
১৯৯০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারতের অপুষ্টি সংক্রান্ত নানা সরকারি রিপোর্ট থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও গবেষকের সহযোগিতায় এই রিপোর্ট তৈরি করেছে ল্যান্সেট। রিপোর্টে প্রকাশ, অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুর ৬৮ শতাংশেরই অপুষ্টিতে ভোগার আশঙ্কা থেকে যায়। আর শিশুদের অকালমৃত্যুর এটাই অন্যতম কারণ। ল্যান্সেটের রিপোর্ট বলছে শিশুদের অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যা অনেক বেশি, প্রায় ৬০ শতাংশ। আর যুবতী মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়ার লক্ষণ প্রায় ৫৪ শতাংশ। ভারতে ২১ শতাংশ শিশুর কম ওজন নিয়ে জন্ম হয়। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৭ সালে প্রতি বছর মাত্র ১.১ শতাংশ হারে এই সমস্যা কমেছে। ৩৯ শতাংশ শিশুর মধ্যে খর্বকায়তা লক্ষ্য করা যায়। ভারতে ৩৩ শতাংশ শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম।
এই রিপোর্ট পেশ করে আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব বলেন, কয়েক দশক ধরে ভারত অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করছে। সেই ১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ থেকে অপুষ্টিজনিত সমস্যার শুরু। যে দেশকে আগে বিভিন্ন শস্য আমদানি করতে হত, এখন সেই দেশে বাইরের দেশে শস্য রফতানি করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এই দেশেই অপুষ্টির কারণে শিশু মৃত্যুর ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেশি। রিপোর্টে প্রকাশ, মাতৃত্বকালীন অপুষ্টি, মায়ের অ্যানিমিয়া, কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করা ইত্যাদি ভারতের অপুষ্টিজনিত সমস্যার বোঝা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে শিশুদের খর্বকায়তা সহ অপুষ্টিজনিত নানা অসুখের সৃষ্টি করে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম হয়। ফলস্বরূপ শিশু মৃত্যুর সংখ্যা এ দেশে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেশি।