বিচারের রক্ষকই যখন অন্যায়ে লিপ্ত হয়, তখন সেটা সব থেকে বড় নিন্দার বিষয় হয়ে ওঠে। আর এমনই ঘটনা ঘটেছে ভারতে। বধূ নির্যাতনের অভিযোগ উঠল দেশের এক প্রাক্তন বিচারপতির বিরুদ্ধে। দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করছেন গৃহবধূ৷ তবে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি দরজা থেকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে তাকে আছড়ে ফেলে সোফায়৷ দুহাত চেপে চলছে বেধড়ক মার৷ চড় থাপ্পর চালাচ্ছেন প্রাক্তন বিচারপতি শ্বশুর৷ যার কলমে এতদিন দোষীরা শাস্তি পেত, তিনিই আজ কাঠগড়ায়। হায়দরাবাদ ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রামমোহন রাও৷
প্রসঙ্গত, এমবি করা মেধাবী ছাত্রী সিন্ধু শর্মার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রামমোহন রাওয়ের ছেলে নুটি বশিষ্টের৷ তবে বিয়ে সুখকর ছিল না৷ বিয়ের পরদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় অত্যাচার৷ মারধর করার তালিকায় স্বামী, শ্বশুর বাদ ছিল না কেউই৷ নেপথ্যে সিন্ধুর পরিবারের পণ হিসেবে মোটা টাকা দিতে না পারা৷ বাধ্য হয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন সিন্ধু৷ গত এপ্রিল মাসে নিজের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিলেন গৃহবধূ সিন্ধু শর্মা৷ তবে সেই সময় নির্যাতনের যথেষ্ট প্রমাণ তিনি তুলে দিতে পারেননি পুলিশের হাতে৷ সম্প্রতি ওই বধূর ওপর অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও সামনে এসেছে৷
এপ্রিল মাসে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সিন্ধু শর্মাকে৷ হাসপাতালের বিছানাতেই শুয়ে কোনরকমে বয়ান দেন সিন্ধুদেবী৷ তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই সিন্ধুর স্বামী বশিষ্ট, শ্বশুর রামমোহন রাও ও শাশুড়ি দুর্গা জয়লক্ষ্মীর বিরুদ্ধে ৪৯৮এ সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে৷ সিন্ধু দেবীর বয়ানে উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য৷ তিনি বলেন, প্রথমে তিনি অভিযোগ জানাতে চাইনি। তাঁর চার বছর ও দু’বছরের দুটো মেয়ে রয়েছে। তিনি চেয়েছিলেন ওরা বাবার ভালোবাসা পাক, সবকিছু মিটে যাক। কিন্তু তা হয়নি। তিনি আরও জানান, তাঁর মেয়ে দুটোকেও আটকে রেখেছে ওরা ৷ এমনকি সিন্ধুকে মারধর করার সময় তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়ে দিত সিন্ধুর শাশুড়ি৷ এমনই নৃশংস চিত্র ফুটে উঠল দেশের ইতিহাসে।