আবারও সংঘাত তুঙ্গে নবান্ন ও রাজভবনের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র হেনস্তার ঘটনা ঘিরে ফের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক দ্বন্দ্বে সরগরম রাজ্য।
বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থা ও রাজ্যপালের তাঁকে উদ্ধার করতে যাওয়ার সমালোচনা করে একটি বিবৃতি দেন তৃণমূল মহাসচিব এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ওই বিবৃতির প্রেক্ষিতে রাজভবন থেকে পাল্টা বিবৃতি জারি করা হল শুক্রবার।
বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে একদল পড়ুয়ার হাতে তিনি আটক হওয়ার পর তাঁকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যপালের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, সরকারকে না জানিয়ে ধনকর চলে গেছেন যাদবপুরে। সরকারকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি। এই আচরণ একেবারেই সংবিধান প্রণেতার মতো নয়।
এরপর শুক্রবার বেলা একটু বাড়তেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের পালটা দিয়ে রাজভবন থেকে জারি হল দ্বিতীয় বিবৃতি। সেখানে বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে বিক্ষোভ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় কোনও ভুল নেই বলে দাবি করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধানকর। রাজভবনের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র স্বার্থের কথা ভেবে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যেতেই পারেন। এতে কোনও ভুল নেই।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্য সচিবের সঙ্গে রাজ্যপালের কথা হয়েছে। তাই না জেনেই তৃণমূলের মহাসচিব ভুল তথ্য দিচ্ছেন। অনেক সময় কেটে যাওয়ার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার কারণেই রাজ্যপাল এবং আচার্য নিজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আলোচনা হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পড়ুয়ার অভিভাবক হিসাবে সবার জন্যই তাঁর দরজা খোলা রয়েছে বলে রাজভবনের বিবৃতিতে প্রকাশ।
পুরো ঘটনায় তৃণমূল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের চূড়ান্ত সংঘাত তৈরি হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেখ্য, মাসখানেক হল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে বাংলায় এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন আইনজীবী জগদীপ ধনকর। খুব কম সময়ের মধ্যেই তিনি যেভাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালেন, তা কিছুটা বিরল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।