একটা সময় ছিল, যখন তন্তুজকে সাধারণত এড়িয়েই যেতেন ক্রেতারা। গুণগত মানই হোক, বা পোশাকের ডিজাইনের একঘেয়েমি— বাজার চলতি ফ্যাশনের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারত না এই সরকারি বস্ত্র সংস্থা। কিন্তু এখন সেসব অতীত। শুধু লাভের মুখ দেখাই নয়। সরকারি যত্নে তন্তুজ এখন স্মার্ট, আধুনিক। পেশাদারিত্বে তা এখন রীতিমতো টেক্কা দিচ্ছে দেশীয় নামজাদা পোশাক সংস্থাগুলিকে। তাদের লক্ষ্মীলাভের বহর এতটাই বেড়েছে যে, রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে তা রীতিমতো হিট দক্ষিণ ভারতেও। পাশাপাশি অনলাইন ব্যবসা এবং সরাসরি রপ্তানিতে আমেরিকা, চীন এবং রাশিয়াতেও তন্তুজের হাত ধরে জনপ্রিয়তা বাড়ছে বাংলার শাড়ির।
চলতি আর্থিক বছরের গোড়ার হিসেব বলছে, এরাজ্যে তন্তুজের শোরুমের সংখ্যা ৬৭টি। দেশজুড়ে যে ক’টি শোরুম আছে, তার মোট সংখ্যা ৮২। তবে শোরুমের গণ্ডির বাইরে অনলাইন ব্যবসায় ২০১৪ সালে নামে তন্তুজ। নিজেদের ওয়েবসাইট মারফত সেই বিক্রি শুরু হলেও, পরবর্তীকালে একাধিক সংস্থার সঙ্গে জোট বাঁধে তারা। তার জেরেই বিদেশের মাটিতে পৌঁছচ্ছে তন্তুজের শাড়ি। শুধু জামদানি বা তাঁত নয়, সিল্কও সমানভাবে বিকোচ্ছে সেখানে।
তন্তুজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “আমরা পুরনো ধ্যানধারণা সরিয়ে রাখতে সব দিক থেকে চেষ্টা করছি। গুণমাণ বাড়াতে নিজেরাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যাম্প করে সরাসরি তাঁতি বা শিল্পীদের থেকে শাড়ি কিনছি। আমরা দক্ষ ডিজাইনার রেখেছি”।
শাড়ি ও অন্যান্য পোশাকে আধুনিকতা ও বৈচিত্র আনা হচ্ছে। বিশ্বে কোন রংয়ের চাহিদা বেশি, তার বিচার করে পোশাকের রং বাছাই করছি। ডিজিটাল প্রিন্টের দিকে ঝুঁকছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেছেন, “ভালো জাতের সিল্ক ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে আমরা দক্ষিণ ভারত থেকে রেশম কিনছি এবং এখানকার কারিগরদের দিয়ে শাড়ি ও পোশাক তৈরি করছি। এরি বা তসরের মতো সিল্ককে আরও কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তার জন্য নতুন ভাবনা আসছে তন্তুজে”।