যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় একতরফা ভাবে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন? ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবি কিন্তু সে কথা বলছে না। বাবুলও মেজাজ হারিয়েছেন। কনুই উঁচিয়ে এক ছাত্রীকে আঘাত করতেও দেখা গিয়েছে আসানসোলের এই সাংসদকে। সে ছবি ফ্রেমবন্দিও হয়েছে। যদিও, বাবুল সুপ্রিয় এই অভিযোগ মানতে চাননি।
যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ হল, বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে ধাক্কা চলাকালীন, তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রীদের গায়ে হাত দেন। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও নিগ্রহ করেন। তাতেই একজোট হয় এবিভিপি বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি।
ঘটনাচক্রে পরিস্থিতি অপ্রীতিকর হয়ে ওঠায় সেখানে হাজির হন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি বাবুলকে তাঁর ঘরে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু আসানসোলের সংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তিনি যে কাজের জন্য এসেছেন, তা পূরণ করবেনই। পরে উপাচার্যের মধ্যস্থতায় সভামঞ্চে পৌঁছন বাবুল। কিন্তু, যে ভাষায় তিনি যাদবপুরের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন, তাতে বাবুলের ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশই ঘটেছে বলে মনে করে বুদ্ধিজীবী মহল। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে কথাবার্তায় যে সংযম, শিষ্ঠাচার থাকা উচিত ছিল, তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। তিনি যে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা মনে করিয়ে যাদবপুরের উপাচার্যকে বলেন, ‘আমাকে আপনার অভ্যর্থনা করা উচিত ছিল।’ উপাচার্যের সঙ্গে বাবুলের সেই কথোপকথন –
উপাচার্যঃ আপনি আমার দফতরে চলুন।
বাবুলঃ যাব না। আমি এখানে রাজনৈতিক নেতা নই। আমার অন্য পরিচয় আছে। আমি দেশের এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। মন্ত্রীও। আপনি কী করছেন? আপনারই উচিত ছিল আমাকে অভ্যর্থনা জানানো।
উপাচার্যঃ এই অনুষ্ঠানে আমি নিজেই আমন্ত্রিত নই।
বাবুলঃ আপনি আমন্ত্রিত না-ই হতে পারেন। আমি আমন্ত্রিত। আপনার ক্যাম্পাসে এসেছি। আপনি থাকলে এটা হত না।
উপাচার্য: স্যর, স্যর…
বাবুল: আপনাদের জন্যই পশ্চিমবঙ্গে এই অরাজকতা হয়েছে। আপনি চাইছেন এটা হোক। আমি নিশ্চিত, আপনি এক জন বামপন্থী।
উপাচার্য: নো নো…।
বাবুল: ক্যাম্পাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসছেন। আপনি কেন থাকবেন না?
উপাচার্য: যখনই খবর পেয়েছি এসেছি…
বাবুল: আজকে এই জন্যই শিক্ষা ব্যবস্থার এই অবস্থা।
(এর পরে বাবুল হলে ঢোকেন, সঙ্গে উপাচার্যও ঢোকেন। উপাচার্য বাবুলকে কিছু বলতে উদ্যত হন)
বাবুলঃ আমি বক্তৃতা দিচ্ছি। পরে কথা বলব। এমন ঘটনা ওঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে!
উপাচার্যঃ অনভিপ্রেত ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় এমন ঘটনা অনুমোদন করে না।
(অনুষ্ঠান শেষে বাবুল বলেন উপাচার্যকে ডাকা হোক। বাবুলের ফোন উপাচার্যকে, পুলিশ ডাকুন। উপাচার্য ফের আসেন )
উপাচার্যঃ এটা এখানকার প্রথা নয়।
(পুলিশ ডাকতে বলে রাজ্যপালের সেক্রেটারির ফোন উপাচার্যকে)
উপাচার্যঃ পুলিশ ডাকব না। প্রয়োজনে ইস্তফা দেব।