ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রের হাল-হকিকত বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগে রাজ্যের ধুঁকতে থাকা শিল্পক্ষেত্রগুলিতে যেমন নয়া প্রাণ সঞ্চার করেছে, তেমনি গড়ে উঠছে নানা শিল্পতালুকও। শুধু তাই নয়। বাংলায় বিনিয়োগ বাড়ানোকে পাখির চোখ করে বারবারই গিয়েছেন বিদেশ সফরে। সর্বত্রই শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে তাঁর আহ্বান ছিল, রাজ্যে বিনিয়োগের সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। আপনারা বাংলায় লগ্নী করুন। এই নিয়ে বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হলেও তাদের মুখে ঝামা ঘষে বাংলায় লগ্নীর জোয়ার এনেছেন মমতা। এবার রাজ্যের শিল্পায়নে ফের সুখবর।
আগামী দু’বছরে বাংলায় আরও ৫,৫২২ কোটি টাকার লগ্নী হবে। এতে প্রত্যক্ষ ভাবে ১১,৫৮৭ নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আর পরোক্ষভাবে আরও এক লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ পাবেন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বণিকসভা সিআইআই-এর এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের শিল্পবাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এর পাশাপাশি গতকাল দেশজুড়ে চলতি আর্থিক মন্দার জন্য ফের নোটবন্দী, তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করা এবং নীতি দিশাহীনতাকে দায়ী করেন অমিত মিত্র।
কলকাতায় বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘নোটবন্দীর দগদগে ক্ষত এখনও সাধারণ মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছে। সবথেকে মজার ব্যাপার নোটবন্দীর আগে অর্থনীতিতে যত নগদ টাকা ছিল, তার থেকে এখন নগদের পরিমাণ বেশি। জিএসটি নেটওয়ার্কের কর্তাব্যক্তিরা আমাকে জানিয়েছিলেন জিএসটি চালু করার জন্য তাঁদের ব্যবস্থা তৈরি হয়নি। আমি তাই তদকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রয়াত অরুণ জেটলিকে অনুরোধ করেছিলাম তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করবেন না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে সরকারের দিশাহীন নীতিও রয়েছে। এই তিনে মিলে বর্তমানে দেশে গ্রোথ রিসেশন চলছে।’
তবে মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে দেশের অর্থনীতিতে যে গভীর মন্দা ও নীতি-পঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে তাতে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম পাঁচ মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব আদায় কমলেও এ রাজ্যের অবস্থা ছিল একেবারে উল্টো। জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যের আয়কর বৃদ্ধির হার ১৯ শতাংশেরও বেশি। যে কারণে দেশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলা। এছাড়া দেশের অর্থনীতির বেহাল দশার মধ্যেও মন্দার মধ্যে জিডিপি বৃদ্ধিতেও ‘এগিয়ে বাংলা’। এ রাজ্যের জিডিপির বৃদ্ধির পরিমাণ ১২.৫৮ শতাংশ। যা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি।