৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলার শাসন ক্ষমতার হাল ধরার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের সমস্ত নেতা কর্মীরা স্লোগান তুলেছিলেন ‘বদলা নয়, বদল চাই’। হিংসার রাজনীতিতে কখনই বিশ্বাস করে না তৃণমূল। তাই হানাহানির পথে হাঁটে না ঘাসফুল শিবির। কিন্তু অন্যদিকে সন্ত্রাসের রাজনীতির পথেই বরাবর হাঁটে গেরুয়া শিবির। সেই সন্ত্রাসের সুরই শোনা গেল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়। ক্ষমতায় এলে বদলা নেবেন, এমনটাই জানালেন তিনি।
বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে কী হবে, তা বোঝাতে গিয়ে বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে প্রকাশ্য সভায় দিলীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘কোনও বদল নয়। বদলাই চাই।’’ ঘটনাচক্রে, প্রায় একই সুরে এ দিন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে আর এক বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও বলেছেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এলে সব হিসেবনিকেশ চোকানো হবে।’’ যেভাবে প্রকাশ্যে বিজেপির নেতারা হিংসা ছড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন তাতে ভয়ের রেশ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। এর তীব্র নিন্দা করেছেন রাজনীতিকেরাও।
বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘পাপের জবাব দিতে হবে। ক্ষমতায় এলে সব হিসেবনিকেশ চোকানো হবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এহেন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। সাংসদ এলাকায় গিয়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন।’’
গত ২২ জুন পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা মোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির গোলমাল হয়। বিজেপির পাত্রসায়র ২ মণ্ডল সভাপতি তমালকান্তি গুঁইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন সেই কাঁকরডাঙা মোড়ের সভায় দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘যে সব তৃণমূল নেতারা এখনও ধমকাচ্ছেন, চমকাচ্ছেন, যে সব পুলিশ কর্মী এখনও মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন, তাঁদের নাম লিখে রাখুন। আমরা এসে এর হিসেবে বুঝে নেব। কোনও বদল নয়। বদলাই চাই।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরার দাবি, ‘‘দিলীপবাবুর কথার জবাব মানুষ বিধানসভা ভোটে দেবেন।’’