অবিভক্ত জেলার প্রাচীনতম সর্বজনীন পুজো কর্নেলগোলার দুর্গোৎসব। দেশ প্রেমিকরা ঠিক করেন বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসবের আড়ালে চলবে বৈপ্লবিক শিবির। অত্যাচারী ইংরেজ সাম্রাজ্যে প্রকাশ্যে তা করা সম্ভব নয়। তাই, শুরু হয়েছিল সর্বজনীন দুর্গোৎসবের। সময়টা ১৯৩৪। ইংরেজ অত্যাচার তখন তীব্র থেকে তীব্রতর।
ইংরেজ সরকার তৎকালীন অবিভক্ত মেদিনীপুরের ওপর প্রায় ৬৮ হাজার টাকা করের বোঝা চাপিয়েছে। নিষিদ্ধ হয়েছে উৎসব অনুষ্ঠান।
যতই স্বাধীনতা আন্দোলন দমানোর চেষ্টা হোক, থেমে থাকলে চলবেনা তাই নতুন কোন মোড়কে চালাতে হবে কার্যকলাপ। শুরু হল ছক কষা।
বাঙালীর সবচেয়ে বড় মিলনের উৎসবে ইংরেজরা বাধা দিলে ধর্মপ্রাণ মানুষেরাও আর উদাসীন থাকবেনা। তারাও চাইবে ইংরেজ সাম্রাজ্য পতনের। তাতে বিপ্লবীদের সুবিধা হবে। এই ভেবে ইংরেজরা দুর্গা পুজোয় বাধা দিতে পারবেনা। বিপ্লবী খুঁজতেই সূত্রপাত এই পুজোর। আর পুজোর আড়ালে চলবে বৈপ্লবিক কাজ। পুঁজি খুব সামান্যই। ঠিক হল মেদিনীপুর শহরের কর্ণেলগোলায়, ব্রাম্ভ সমাজের ফাঁকা জায়গায় দেবীর আরাধনা করা হবে। নিমরাজি হয়েই মত দিল ইংরেজ সরকার। এখানে দেবীর আরাধনা আসলে ভারতমাতার মুক্তির সাধনা। তাই সাজপোষাকে বয়কট করা হল বিদেশীপণ্য। দেবীর শড়ি, গয়না সবই তৈরি হল মাটি দিয়ে। সূচনা হল পুজোর।
সেই থেকে আজও হয় এই পুজো। অবিভক্ত জেলার প্রথম সর্বজনীন পুজো। কর্ণেলগোলা আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসব নামে পরিচিত এই পুজো। এবছর পা দিল ৮৫ তম বর্ষে।