দিল্লী থেকে কলকাতায় ফিরেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন কলকাতায় এসেই জানিয়ে দিলেন যে এনআরসি’র মতো বিষয়ে তিনি কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির সম্পূর্ণ বিপরীতেই থাকবেন।
এদিনই নবান্ন থেকে বেরোবার মুখে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাংলায় উস্কানিমূলক মন্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলার সকল মানুষ নিশ্চিত থাকুন, এখানে কোনও এনআরসি হবে না।’
প্রসঙ্গত, এনআরসি নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এতটা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠার যথেষ্ট কারণ ছিল। কারণ রাজ্যে প্রথম এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন উত্তরবঙ্গের এক যুবক। শুক্রবার সকালে ময়নাগুড়ি রেলগেটের কাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় স্থানীয় বাসিন্দা অন্নদা রায়ের দেহ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও নানা জায়গায় এনআরসি আতঙ্কে রাস্তায় নেমে পড়ছে মানুষ।
এইরকম মর্মান্তিক খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছতেই তিনি এদিন মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্যে দু লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি আসলে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যেই এনআরসির কথা প্রচার করছে। শুনে রাখুন, আপনাদের কারও গায়ে হাত দিতে হলে আগে আমার গায়ে হাত দিতে হবে। বাংলা ছেড়ে কাউকে যেতে হবে না।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমি বলছি চিন্তা করার কোনও কারণ নেই, আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন।’
শুধু তাই নয়, এনআরসি নিয়ে তিনি যে কোনও আপোষের রাস্তায় হাঁটবেন না, তা বোঝাতেই তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে যে মিটিং করে এলাম, তাতে কোনওরকম এনআরসি নিয়ে কথাই হয়নি। কারণ এনিয়ে কথা বলার কিছুই নেই। বাংলায় কোনও এনআরসি হবে না।’ এই থেকেই তিনি বিরোধীদের বুঝিয়ে দিলেন যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটা ছিল প্রশানিক। কার্যত এই মন্তব্য করে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনই মনে করছেন তামাম রাজনৈতিক মহল।