জুন মাসে মল্লারপুর স্টেশনের কাছে এক তীব্র বিস্ফোরণ হয়। যার জেরে উড়ে যায় একটি ক্লাবের ছাদ। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ভেঙে পড়ে ক্লাবের পাশে একটি দোতলা বাড়ির জানলার সব কাচ, উড়ে যায় আরেকটি বাড়ির টিনের ছাদ। এই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন এক বিজেপি নেতা। ধৃত ওই নেতা হলেন বিজেপি–র সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়।
তিন মাস আগে মল্লারপুরের একটি ক্লাবে বিস্ফোরক মজুত রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উস্কানি দেওয়া-সহ নানা অভিযোগে মামলা রুজু করেছে জেলা পুলিশ। দেওয়া হয়েছে অস্ত্র আইনের ধারাও। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘মল্লারপুরে ক্লাবে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া অতনুর বিরুদ্ধে ময়ূরেশ্বর, সিউড়ি, শান্তিনিকেতন এবং নানুর থানায় একাধিক মামলা আছে। ওই সমস্ত মামলায় তিনি ‘ওয়ান্টেড’ ছিলেন। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পুলিশের আরও দাবি, নানুরের বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের খুনের ঘটনায় বোলপুর সিয়ান হাসপাতালের সামনে রাস্তা অবরোধ এবং মহরমের দিন জায়গায় জায়গায় অবরোধের প্রধান মাথাও ছিলেন অতনু। সেই ধারাও যোগ করা হয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রুজু হওয়া একাধিক মামলায় ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩০৭, ৩২৫, ৩২৬, ৪২৭, ৪৩৫, ৫০৬, ১২০–বি আইপিসি এবং ২৫/২৭ আর্মস অ্যাক্ট ও ৩/৪ ইএস অ্যাক্টে অভিযোগ রয়েছে। অতনুকে মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
মামলার সরকারি আইনজীবী সৈকত হাতি জানান, অতনুর বিরুদ্ধে মল্লারপুর বিস্ফোরণে বিস্ফোরক আইনের একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া, ময়ূরেশ্বর থানার গোচেপাড়া গ্রামে গত ২৩ জুন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা এবং খুনের চেষ্টার মামলাও রয়েছে তাঁর নামে। এ দিন আদালতে ময়ূরেশ্বর থানার তিনটি এবং মল্লারপুর থানার একটি মামলায় অতনুকে জেরা করতে চেয়ে পুলিশ দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে। ভারপ্রাপ্ত বিচারক অমিত চক্রবর্তী বিস্ফোরণের মামলায় সাত দিন পুলিশ হেফাজত এবং ময়ূরেশ্বরের ঘটনায় ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
গত ২৯ জুন গভীর রাতে মল্লারপুর বাজারের ওই ক্লাবে বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ প্রথমে মল্লারপুর রেলপাড়ের বাসিন্দা মিঠু শেখকে গ্রেফতার করে। পরে ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব দত্ত গ্রেফতার হন। ওই দু’জনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিস্ফোরণ-কাণ্ডে অতনুকে নিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও ৮ জন হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন।