সারা দেশে অর্থনৈতিক মন্দার বাজার। গাড়ি বাজারে নেমেছে বিরাট ধ্বস। জিডিপির নিরিখে বিশ্ববাজারেও পিছিয়ে পড়েছে ভারত। প্রায় দিন শেয়ারের বাজারের সূচক নিম্নগামী। গাড়ি বাজারের পাশাপাশি একাধিক সংস্থাতে সেই প্রভাব পড়ছে। তবে এই মন্দার বাজারেও অর্থমন্ত্রীর গতকালের মন্তব্যে হতবাক দেশের অর্থনৈতিক মহল। বিস্কুট থেকে সাবান-শ্যাম্পু, তাদেরও বিক্রি কমছে। এই অবস্থায় নির্মলা সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করলেন, ‘‘উৎপাদন চাঙ্গা হওয়ার স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।’’
অর্থমন্ত্রীর দাবি, উৎপাদন এপ্রিল থেকে জুনে যে হারে বেড়েছিল, তার তুলনায় জুলাই মাসে আরও বেশি হারে বেড়েছে। বাস্তবিকই, জুনের ১.২ শতাংশের থেকে জুলাই মাসে কারখানার উৎপাদন ৪.৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। কিন্তু নির্মলা এটা বললেন না যে, ২০১৮-র জুলাইতে উৎপাদনে বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৫ শতাংশ।
নির্মলা এইদিন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার তৃতীয় দফার পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু অর্থনীতির হালকে তিনি কী ভাবে দেখছেন? তা নিয়ে মন্তব্যে যেতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি নাম দিতে আসিনি। কাজ করতে এসেছি।’’ মূল্যবৃদ্ধির হার, বিদেশি লগ্নির পরিমাণ, বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারের মতো নানা মাপকাঠি তুলে ধরে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, অর্থনীতির হাল খুব খারাপ নয়। কিন্তু এপ্রিল থেকে জুনে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে এসেছে কেন তবে? তিনি কি প্রসঙ্গটা আড়াল করতে চাইছেন? প্রশ্ন শুনে রাগত স্বরে নির্মলা বলেন, ‘‘এ তো সরকারি পরিসংখ্যান। সকলের সামনেই রয়েছে। কারও সন্তুষ্টি হলে তুলে ধরতেই পারি।’’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ক’দিন আগেই বলেছিলেন, অর্থনীতির রোগ সারাতে গেলে আগে রোগের কথা স্বীকার করতে হবে। নির্মলা কি সেটা করছেন? তাঁর দাবি, বিদেশি লগ্নি যথেষ্ট পরিমাণে আসছে। কিন্তু তিনি এটা বলছেন না, শুধু জুলাই মাসেই এ দেশের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলি ১২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। নির্মলা বলেছেন, বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার বাড়ছে। কিন্তু নির্মলার পরিসংখ্যানই বলছে, রফতানির হাল খারাপ বলে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনে ঘাটতিও বাড়ছে। নির্মলা দাবি করেছেন, গত অর্থ বছরে লগ্নির হার তার আগের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু নির্মলা যা বলেননি, মোদী সরকারের প্রথম বছরের তুলনাতেই সেই লগ্নির হার কম।
