সম্প্রতি দেশের কেন্দ্রীয় সরকার মোটর যান সংক্রান্ত নতুন বিল লোকসভায় পাশ করিয়েছে। কিন্তু সেই আইন মানতে রাজি নয় বিরোধীরা। এমনকি সেই আইনের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে দেশের বেশকিছু বিজেপি–শাসিত রাজ্যগুলিকেও। সংশোধিত মোটর যান আইনে একধাক্কায় জরিমানা বেড়েছে কয়েকগুণ। যার ফলে দেশজুড়ে চলছে বিতর্ক। বেশ কিছু রাজ্য এই আইন চালু করতে নারাজ। দেখা যাচ্ছে, অন্য সরকার দ্বারা চালিত রাজ্যগুলি ছাড়াও কয়েকটি বিজেপি–শাসিত রাজ্যও কেন্দ্রের আইন হবহু কার্যকর করার সাহস পাচ্ছে না।
যেমন যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। সেখানে এখনো চালু রয়েছে সেই পুরনো আইনই। কেন্দ্রের কাছে নতুন আইনের জরিমানা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে বিজেপি–শাসিত মহারাষ্ট্র। সে পথে এবার হাঁটল কর্ণাটকও। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে জরিমানা কমানোর তোড়জোড় চলছে সেখানেও। এমনকি মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতও সংশোধিত আইন অনুযায়ী জরিমানা কার্যকর করেনি। এই আইন চালু করেনি উত্তরাখণ্ডও।
কর্ণাটকের পরিবহণ দপ্তরের দায়িত্বে রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাবাদি। নয়া আইনে নজর রেখে জরিমানা কমাতে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। গুজরাত এবং অন্যান্য বিজেপি–শাসিত রাজ্য কী করছে, সেইদিকেও নজর রাখতে বলেছেন। গুজরাত জরিমানার অঙ্ক ৫০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করেছে। গুজরাত সরকারের পদক্ষেপ পর্যালোচনার জন্য কর্ণাটকের একটি সরকারি দল আহমেদাবাদ গিয়েছে। আলোচনার জন্য দিল্লিতে গিয়েছে একটি দল। কর্ণাটকের নেতা, কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়ার কথায়, ‘সংশোধিত আইনে জরিমানা কমানোর সুযোগ রয়েছে। গাড়ি চালানোর বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো ও প্রাণহানি রুখতেই আইন সংশোধন করা হয়েছে।’
এক ট্রাফিক পুলিশ জানান, গত ন’দিনে বেঙ্গালুরুতে ৮৪,০০০ মামলা হয়েছে ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘনের। জরিমানা আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা। জরিমানা বৃদ্ধিতে আমজনতা ক্ষেপে ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির রাজ্য নেতারা। জনতা ফুঁসলেও জরিমানা বাড়ানোর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি। তাঁর কথায়, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। বেপরোয়া ভাবে অনেকে গাড়ি চালান। তএই এমন পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কেন্দ্রের এমন নীতি মানতে রাজি নয় বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই।