বৃহস্পতিবার ‘বোর্ড অফ ট্রেড’-এর বৈঠকে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির বক্তব্যের সমর্থনে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী বলে বসেছিলেন, ‘অর্থনীতি নিয়ে অঙ্ক কষার মধ্যে যাবেন না…। অঙ্ক কষে আইনস্টাইন মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করেননি।’ মাধ্যাকর্ষণের আবিষ্কর্তা হিসেবে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের নাম যে তিনি ভুল করে বলে ফেলেছিলেন, অবশেষে তা স্বীকার করলেন পীযূষ গোয়েল। দাবি করলেন, বৃহস্পতিবার আইজ্যাক নিউটনের বদলে আইনস্টাইনের নাম বেরিয়ে গিয়েছিল মুখ ফস্কে। একই সঙ্গে, এমন ভুল করা মানে যে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া নয়, কিছুটা রসিকতার ছলে তা বোঝাতে আইনস্টাইনের উক্তিই তুলে ধরলেন তিনি। শুক্রবার মুম্বইয়ে পীযূষ বলেন, ‘ভুল সবারই হয়। যাঁর নাম আমি ভুল করে বলেছিলাম, সেই আইনস্টাইনের কথাতেই বলি— যাঁর কখনও ভুল হয়নি, তিনি কখনও নতুন কিছু চেষ্টাই করেননি।’ যদিও এরপরেও নেটিজেনদের কটাক্ষ থেকে রক্ষা পাননি তিনি। তাদের নয়া রসিকতা, ‘হাঁপ ছেড়ে’ বলেছেন, ‘যাক, মাধ্যাকর্ষণের আপেল তা হলে শেষমেশ ফিরে গেল নিউটনের কোলেই’!
দেশের অর্থনীতির দুরবস্থার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বাণিজ্য বোর্ডের বৈঠকে পীযূষ বলেছিলেন, ‘টেলিভিশনে যে অঙ্ক এবং তথ্যের পরিসংখ্যান দেখানো হয় তাতে বিশ্বাস করবেন না। অর্থনীতি নিয়ে অঙ্ক কষতেও যাবেন না। ৫ লক্ষ কোটি ডলার জিডিপি-র জন্য ১২ শতাংশ বৃদ্ধি দরকার। এদিকে বৃদ্ধির দর ৬ শতাংশ — এসব অঙ্ক কষার দরকার নেই। অঙ্ক কখনই আইনস্টাইনকে মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করতে সাহায্য করেনি।’ এর পরেই রঙ্গ-রসিকতায় ভেসে যায় সোশ্যাল মিডিয়া। কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরাও। কিন্তু তার পরেও গত কাল পীযূষ ব্যাখ্যা দেন, তিনি ওই কথা বলেছিলেন শিল্পমহলকে রপ্তানিতে উৎসাহ দিতে। বোঝাতে চেয়েছিলেন, অত হিসেব কষে চললে আইনস্টাইনের মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করা হত না। অর্থাৎ, নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাতেও মাধ্যাকর্ষণের আবিষ্কর্তার নাম তিনি শোধরাননি। ফলে জারি থেকেছে বিদ্রুপ। অবশেষে শুক্রবার নিজের ভুল মেনে নিয়েছেন মন্ত্রী। যা দেখে টুইটারের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার কটাক্ষ, ‘ক্যাচ ধরতে হলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বলে নজর রাখা জরুরি।… নইলে সব দোষ মাধ্যাকর্ষণ, অঙ্ক, ওলা-উবের আর এ দিক-ও দিকের কথার ওপরে চাপাতে হবে।’