একেই বোধহয় বলে নিয়তি। নামার কথা ছিল নৈহাটি, কিন্তু ট্রেনে উঠে ঘুমিয়ে পড়ার ফলে কাঁকিনাড়ায় নেমেছিলেন নদিয়ার মাঝদিয়ার ভীমপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিত বিশ্বাস । আর তার জেরেই প্রাণ হারালেন ওই যুবক। ঘটনার জেরে ফের প্রকাশ্যে এল রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত কাঁকিনাড়ার নিরাপত্তার বেহাল চিত্র।
নৈহাটি যাওয়ার জন্য শিয়ালদাগামী মুজফফরপুর এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়ায় আর নৈহাটি নামতে পারেননি। কাঁকিনাড়া স্টেশনে নামেন। ট্রেন থেকে নামতেই একদল দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে। শুরু হয় ধ্বস্তাধ্বস্তি। তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল টাকা পয়সা ইত্যাদি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। বিশ্বজিতের বাধা পেয়ে তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। বোমার স্প্লিন্টার ছিটকে আহত হন ওই যুবক। আহত হন আরও ২ যাত্রী। রক্তাক্ত অবস্থায় জিআরপির আধিকারিকরা বিশ্বজিৎকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনা ফের প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল রেলের যাত্রী সুরক্ষাকে। জিআরপি অফিসের নাকের ডগায় যদি এমন ঘটনা ঘটে,তাহলে তাদের নিরাপত্তা কোথায়? প্রশ্ন তুলেছে ট্রেনযাত্রীরা। প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে অবরোধের সময় যাত্রীবোঝাই ট্রেনে বোমা ছুঁড়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর ফের এই ঘটনায় আতঙ্কে যাত্রীরা।
নির্বাচনের সময় থেকেই কার্যত গুলি-বোমা-বারুদের স্তুপে পরিণত হয়েছে কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়া চত্বর৷ প্রায় প্রত্যেকদিন কাঁকিনাড়ার ৫ নম্বর সাইডিংয়ের কাছে মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আয়ত্তে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তল্লাশিতে প্রচুর বোমা উদ্ধার হয়েছে। এলাকায় শান্তি ফেরানোর দাবিতে রেল অবরোধ করেছেন স্থানীয়রা। পরক্ষণেই ফের বোমাবাজি হয়েছে এলাকায়। কিন্তু কোনও কিছু করেই ছবিটা যে বদলায়নি তা প্রমাণ করল কালকের ঘটনা।