‘সিপিএমের হার্মাদরা আগে লাল জামা পরত। এখন নিজেদের লাল পতাকা বিক্রি করে গেরুয়া পরে বিজেপির জল্লাদ হয়েছে৷ এক হাতে গদা, এক হাতে তরোয়াল নিয়ে ধর্ম করছে৷’ বারবারই এই অভিযোগ করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই অভিযোগ যে আদৌ ভ্রান্ত নয়, একাধিক বার মিলেছে তাঁর প্রমাণ। তথ্যও বলছে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে যথেষ্টই বৃদ্ধি পেয়েছে তৃণমূলের ভোটের হার। বরং বামেদের ভোটেই বাংলায় সুবিধা করে দিয়েছে বিজেপিকে। অর্থাৎ বামভোটের সুবাদেই রাজ্যে আজ রণং দেহি ‘রাম’। এবার ফের রাম-বামকে মিলিয়ে দিল বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযান।
প্রসঙ্গত, এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই-সহ বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলি শুক্রবার ‘সিঙ্গুর থেকে নবান্ন চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল। ওই অভিযান ঘিরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার মল্লিকফটক। অবস্থার সামাল দিতে জলকামান ও টিয়ার গ্যাসের ব্যবহার করতে হয় পুলিশকে। যার পর বিবৃতি জারি করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, পুলিশের সঙ্গে পরিকল্পনা করে মিছিলকারীদের উপর হামলা করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর পুলিস বর্বরোচিত আক্রমণ করেছে। আর এরপরই বিমানের সুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাংলায় কোনও আন্দোলনই এখন আর নিরামিষ থাকছে না। সবই আমিষ হয়ে যাচ্ছে। আজ যেভাবে আন্দোলনকে পুলিশ দিয়ে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হল। গণতন্ত্রে এর কোনও স্থান নেই।’ শুধু দিলীপই নন, গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার অভিযোগ করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়-ও।
বামেদের পাশে দাঁড়িয়ে রামেদের বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘গণতন্ত্রের ওপরে আস্থা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। কেউ ওঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেই কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম সবথেকে যদি কোথাও থাকে, সেটা কলকাতায়। যুব মোর্চার নেতারা আন্দোলন করলে ঠিক আজকের মতোই ব্যবহার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। উনি দুর্নীতি করেই যাচ্ছেন কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ সরব হলে ব্যবস্থা নিচ্ছে। ওঁকে সরাতে হবেই।’ উল্লেখ্য, গত লোকসভা ভোটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, বামেদের ভোটে রাজ্যে শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। বাম ভোটাররাই সমর্থন দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এবার তারই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ পরোক্ষে বাম আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশকে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির দিলীপ-কৈলাসরা। যার ফলে আবারও প্রকাশ্যে এসে গেল রাম-বামের ‘অটুট বন্ধন’।