এবার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এয়ার ইন্ডিয়া, বিএসএনএল, রেল, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিপন্ন কর্মীদের পাশে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিতে ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১টায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রতিবাদসভার আয়োজন করতে চলেছে তৃণমূল। হাজির থাকবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, চাকরি ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যাঙ্ক অফিসার ইউনিয়নের প্রথম সারির নেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। কাজ হারানোর আশঙ্কায় এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীরাও তাঁর শরণাপন্ন হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এঁরা প্রতিদিন আমাদের কাছে এসে কাঁদেন। এয়ার ইন্ডিয়াটা বিক্রি করে দিল বলে। বিএসএনএলের ৭০ হাজার কর্মী সাত মাস ধরে মাইনে পাচ্ছেন না’। এসবের প্রতিবাদেই এবার আন্দোলনে নামতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সরকারি কর্মী সংগঠনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও অফিসারদের বঞ্চনার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে মমতা বলেন, ‘ব্যাঙ্কগুলোকে সংযুক্তিকরণের নামে কর্মীদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইউবিআই-এর হেডকোয়ার্টার এখান থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এক দিন শুনবেন, ব্যাঙ্কটাই নেই। শুধু অ্যাপ ঘুরছে। যখন অ্যাপটা খুঁজতে যাবেন, কে জানে হয়তো এমন দিন আসবে, যখন জানতে পারবেন অ্যাপটাও হারিয়ে গেছে!’ রাজ্যের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, ‘আমি কারও চাকরি খেতে দিইনি। সরকারি ঠিকা কর্মীদের অবসরের বয়সও ৬০ বছর করে দিয়েছি। গ্রেড এ, বি সি, ডি-তেও অবসরের বয়স বেড়েছে।’
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতেই আন্দোলনরত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। রাজ্যে তৃণমূলের জনভিত্তিও এর মাধ্যমে শক্তিশালী করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। অতীতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মচারীদের স্বার্থে আন্দোলনের কপিরাইট ছিল কার্যত বামেদের দখলে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং জনভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ায় বামেদের সেই আন্দোলনে ভাঁটা পড়েছে। অন্য দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে তৃণমূল সংসদে ও সংসদের বাইরে লাগাতার সরব থেকেছে। এবার সেই পথ ধরেই আন্দোলনে নামবে জোড়াফুল শিবির। নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূল নেত্রী স্বয়ং।