গত মাসের ১৫ অগস্ট থেকে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত শিয়ালদহ সেতুর মধ্যস্থল অর্থাৎ মহাত্মা গাঁধী রোড এবং বেলেঘাটা মেন রোড সংযোগকারী দু’টি র্যাম্পের মাঝের অংশে যান চলাচল বন্ধ রেখে স্বাস্থ্য অডিট করেন বিশেষজ্ঞরা। কেএমডিএ সূত্রে খবর, সেই অডিট রিপোর্ট নিয়েই সোমবার বৈঠক করেন রাজ্য সররকারের ব্রিজ অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্যরা। সেই বৈঠকেই বিশেষজ্ঞরা সেতুর ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারপরেই সিদ্ধান্ত হয় শিয়ালদহ সেতুতে নিষিদ্ধ করা হবে ভারী পণ্যবাহী যান চলাচল। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে শিয়ালদহ সেতুর ওপরে নিষিদ্ধ হল ট্রাম চলাচল।
বিদ্যাপতি সেতুর ট্রামলাইন তুলে দিতে হবে পুরোপুরি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নবান্নে রিপোর্ট জমা দিল ব্রিজ অ্যাডভাইজরি কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিয়ালদা উড়ালপুলের বহন ক্ষমতা কমেছে। তাই ট্রামলাইন পুরোপুরি তুলে দিতে হবে। পাশাপাশি, পিচের মোট পলেস্তরা তুলে ফেলতে হবে। বসাতে হবে এক ইঞ্চির মধ্যে আধুনিক পলেস্তরা। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
বিভিন্ন সময়ে, মাঝেরহাট সেতুর মতোই শিয়ালদহ সেতুর উপর মেরামত করতে গিয়ে বিটুমিনের আস্তরণের উপর নতুন প্রলেপ পড়েছে। পর পর ওই প্রলেপে সেতুর উপর বিটুমিনের আস্তরণ মোটা হয়ে গিয়ে ভার বাড়িয়েছে সেতুর। এক বিশেষজ্ঞের কথায়, কোনও কোনও অংশে সেতুর উপর বিটুমিনের আস্তরণ ৪০ থেকে ৫০ মিমি মোটা হয়ে গিয়েছে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘বিটুমিনের প্রলেপ ৪০ থেকে ৫০ মিমি মোটা হলে সেতুর উপর প্রতি বর্গফুটে অতিরিক্ত প্রায় ২০ কিলোগ্রাম ভার বৃদ্ধি পায়।” তিনি মাঝেরহাট সেতুর কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন,‘‘ মাঝেরহাট সেতুতেও ঠিক ওই ভাবেই বেড়ে গিয়েছিল অতিরিক্ত ভার। সেই সঙ্গে ছিল পরিত্যক্ত ট্রাম লাইনের ভার।” শিয়ালদহ সেতুতেও একই ভাবে বিটুমিনের অতিরিক্ত প্রলেপের সঙ্গে রয়েছে ট্রাম লাইন।
বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ, অবিলম্বে সেতুর ওই ট্রাম লাইন সরাতে হবে। সঙ্গে সেতুর ওই অতিরিক্ত বিটুমিনের প্রলেপ চেঁছে ফেলে ‘ট্রিম’ করে হালকা করতে হবে সেতুকে। সেতুর কয়েকটি স্তম্ভেরও মেরামত করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে ওই কাজ করতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় প্রয়োজন।