৩৭০ ধারা রদের পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে ব্যাহত হয়েছে শান্তি। একের পর এক আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে গোটা রাজ্য জুড়েই। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বারবার বলে এসেছে, সেখানে মানুষ শান্তিতেই আছে। কিন্তু যেসব কাশ্মীরি যুবক-যুবতীরা কাজের সূত্রে বা পড়াশোনার খাতিরে নিজের রাজ্যের বাইরে বসবাস করে, তাঁদের অবস্থাও যে কতটা শোচনীয়, সেটা হয়তো ভেবে দেখেনি কেন্দ্র।
কাশ্মীরের বাইরে থাকা অনেক যুবককেই এই ৩৭০ রদের পর থেকে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। অথবা হারাতে হয়েছে নিজের কাজ। কিন্তু কেন এরকম হচ্ছে, তার সদুত্তর পাওয়া যায়নি কোনপক্ষের কাছেই। সম্প্রতি জানা গেছে, মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের সংগীতশিল্পী আদিল গুরেজিকে। সেখানে তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কাশ্মীর থেকে একমাস পর মুম্বইতে ফিরে এমন পরিস্থিতির শিকার হন তিনি। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এখনো পর্যন্ত তাঁর কী অপরাধ তা জানা যায়নি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ভারত–পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখার সীমানা, উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ এলাকার বাসিন্দা আদিল। ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সময় নিজের গ্রামেই ছিলেন তিনি। কড়াকড়ির ফলে তিনি আটকে পড়েন। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে তিনি মুম্বই আসেন। আর তারপরেই এমন বিপদের সম্মুখীন হন তিনি। আদিল বলেন, ‘অবরুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে অনেক কষ্টে মুম্বই আসি। ফিরে এসেই দেখি, বাড়িওয়ালা বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’
তবে মুম্বই পুলিসের সহায়তায় তিনি নিজের ফ্ল্যাটে উঠতে পেরেছেন। কিন্তু কাশ্মীরি হওয়ার ‘অপরাধে’ তাঁর বন্ধুবান্ধব ও সহশিল্পীরা তাঁকে এড়িয়ে চলছে। তাঁকে কাজে নিতে চাইছে না বলে এই শিল্পীর অভিযোগ। অনলাইনে গানের দুনিয়ায় আদিলের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। তাঁর কাশ্মীরি সুর এবং গানের ভক্ত লাখ লাখ তরুণ–তরুণী।
কিন্তু জম্মু–কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সেই অঞ্চলটির মানুষ যেন ভারতজুড়ে নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। গত বুধবার ভারতের রাজস্থানে এক কাশ্মীরি ছাত্র নিপীড়নের শিকার হয়। তাঁকে সালোয়ার কামিজ পরিয়ে বেধড়ক মারধর করে কয়েকজন যুবক। নির্যাতনের শিকার ওই কাশ্মীরি তরুণ রাজস্থানে নিমরানায় একটি বেসরকারি কলেজের অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। আর এরপর মুম্বইয়ের মত শহরে এমন ঘটনা ঘটায় হতবাক অনেকেই।