ইতিহাস বইয়ের পাতায় পড়া হোক অথবা লোকমুখে শোনা, ১০০ বছর আগে ঘটে যাওয়া জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড এখনো টাটকা অনেক মানুষের স্মৃতিতেই। মৃতের সংখ্যায় হেরফের হলেও এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা নিয়ে মতপার্থক্য নেই ইতিহাসবিদদের মধ্যে। এ বার তা মেনে নিলেন ইংল্যান্ডে খ্রিস্টধর্মাবলম্বী মানুষদের তীর্থক্ষেত্র হিসাবে প্রসিদ্ধ ক্যান্টারবারি-র আর্চবিশপও। ১০০ বছর আগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চাইলেন তিনি। এমনকি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অনুশোচনা প্রকাশও করলেন।
দু’দিনের সফরে সোমবার সস্ত্রীক অমৃতসর এসে পৌঁছন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। মঙ্গলবার জালিয়ানওয়ালাবাগ স্মৃতি উদ্যানে যান তিনি। সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নৃংশসতার জন্য ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘‘ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি নই আমি। নই রাজনীতিকও। তবে ধর্মীয় নেতা হিসাবে যে মর্মান্তিক ইতিহাসের সাক্ষী হলাম, তাতে শোকস্তব্ধ আমি। যে জঘন্য অপরাধ ঘটানো হয়েছে, তার জন্য অত্যন্ত লজ্জিত।’’
জালিয়ানওয়ালাবাগ স্মৃতি উদ্যানের ভিজিটর বুকে আর্চবিশপ জাস্টিন লেখেন, ‘‘১০০ বছর আগে এই উদ্যান যে নৃশংসতার সাক্ষী থেকেছে, তাতে আজও এখানে এসে লজ্জায় মাথা নত হয় যায়। মৃতদের পরিবার এবং আত্মীয়েরা সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠবেন আশা করি। সেই সঙ্গে প্রার্থনা করি, আমরা যেন ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারি। হিংসার শিকড় উপড়ে ফেলে যেন ছড়িয়ে দিতে পারি সমন্বয়ের বার্তা।’’
২০০ বছরের বেশি সময় ধরে অপশাসনের জন্য ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে ইতিমধ্যেই ভারতের তরফে একাধিক বার দাবি তোলা হয়েছে। জালিয়ানওয়ালাবাগ নিয়ে তিনিও কি ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমা চাইতে বলবেন? উত্তরে আর্চবিশপ জাস্টিন বলেন, ‘‘নিজের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি আমি। তা ইংল্যান্ডেও পৌঁছে যাবে।’’