শেষ রক্ষা হল না চন্দ্রযান-২-এর উদ্দেশ্য। আজই চাঁদের বুকে অবতরণ করার কথা ছিল চন্দ্রযান-২-এর। সেই লক্ষ্যেই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল রাফ ব্রেকিং আর ফাইন ব্রেকিং। চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে ছিল বিক্রম ল্যান্ডার। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেই তার সঙ্গে ইসরোর গ্রাউন্ড স্টেশনের যোগাযোগ চিরতরে হারিয়ে যায়। শনিবার ভোররাত ২.২৫ মিনিট নাগাদ সংযোগ ছিন্ন হওয়ার কথা ঘোষণা করে দেন ইসরো প্রধান কে সিবন। সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছেও এভাবে ব্যর্থ হওয়ায় চন্দ্রযান–২–র পুরো দলটাই ভেঙে পড়েছে।
কিন্তু কোনওমতেই তাদের এতদিনের চরম খাটনিকে অস্বীকার করতে পারবে না কেউই। পুরুষ, মহিলা বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ, কর্মী মিলিয়ে পুরো চন্দ্রযান–২ অভিযানের দলে ছিলেন ১৬৫০০ জন। প্রকল্প অভিযানের কর্তা, ৬২ বছরের সিবন ১৯৮২ সালে ইসরোয় যোগ দেন। যেতে চেয়েছিলেন এরোডায়ানামিক্সে, গেলেন পিএসএলভি–তে।
মহাকাশ ইতিহাসে অবশ্যই চন্দ্রযান–২ উল্লেখ্যযোগ্য ঘটনা। কারণ এই প্রথম কোনও মহিলা বিজ্ঞানী অন্তর্বর্তী–মহাজাগতিক বা ইন্টার–প্ল্যানেটারি প্রকল্পের শীর্ষে ছিলেন।
এছাড়া চন্দ্রযান–২–র মিশন ডিরেক্টর, আরেক মহিলা বিজ্ঞানী ঋতু কারিধাল মঙ্গলযান প্রকল্পেও কাজ করেছেন। আরেক বিজ্ঞানী তথা আহমেদাবাদের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর অনিল ভরদ্বাজও মঙ্গলযান প্রকল্পে ছিলেন।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এস সোমনাথ এবং ভি নারায়ণ ক্রায়োজিনিক ইঞ্জিন ফেসিলিটির প্রধান ছিলেন। ক্রায়োজিনিক ইঞ্জিনে যে কোনওরকম যান্ত্রিক ত্রুটি তাঁরাই সামলিয়েছেন। আরেক মিশন ডিরেক্টর জে জয়প্রকাশ এবং ভেহিক্যাল্ ডিরেক্টর রঘুনাথ পিল্লাই দুজনেই রকেট বিশেষজ্ঞ। ১৫ জুলাই চন্দ্রযান–২–র প্রথম অসফল উৎক্ষেপণের পর থেকে তাঁদের তত্ত্বাবধানেই হয়েছিল রকেটের নজরদারি।
ইউআর রাও উপগ্রহ কেন্দ্রের ডিরেক্টর তথা স্যাটেলাইট ফেব্রিকেটর ও রকেট ইঞ্জিনিয়ার পি কুনহিকৃষ্ণন চন্দ্রযান–২–র সাদা–সোনালি রং–এর পরিকল্পক।