আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে শুক্রবার রাতে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আজ সন্ধেবেলাই তাঁকে উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। প্রাথমিক ভাবে পাঁচ ডাক্তারের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে চিকিৎসা শুরু হয়। জানা গেছে, তাঁর মুখে বাইপ্যাপ মেশিন বসানো হয়েছে।
এদিন দুপুরে বাড়িতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ফুসফুসে সংক্রমণ কয়েকদিন আগেই ধরা পড়ে তাঁর। এদিন সেই নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত হয় বলে খবর। শুক্ররবার দুপুরে ঘরের মধ্যেই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। ডঃ কৌশিক চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ৮ সদস্যের মেডিকাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মেডিকাল বোর্ড আরও বাড়ানো হবে। আপাতত তাঁর রক্তচাপের মাত্রা ৬৫/৪০। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণও খুব কম। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা মনে করছেন, তাঁর শ্বাসের সংক্রমণের কারণে রক্তচাপের এই হেরফের। প্রায় ১০ রকম রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বুদ্ধবাবুর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনেকটাই কমে গেছে। রক্ত দিতে হবে তাঁকে। তবে প্রথমে তাঁকে হাসপাতালে যে অবস্থায় আনা হয়েছিল, তার তুলনায় তিনি এখন অনেকটাই ভালো আছেন।
বুদ্ধদেববাবু ভর্তি হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়ে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, “চিকিৎসকরা পুরোটা বলতে পারবেন। যখন নিয়ে আসা হয়েছিল, তার থেকে অনেকটা বেটার আছেন। ওনার হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল। তাই রক্ত দিতে হবে। আপাতত স্থিতিশীল রয়েছেন। একটু চিন্তা ছিল। অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। উনি উঠে বসেছেন বলে শুনলাম।”
২০০৯ সাল থেকে বুদ্ধবাবুর সিওপিডি-র সমস্যা। যে কারণে তাঁকে প্লেনে চড়তে বারণ করেছিলেন চিকিৎসকরা। ২০১১ সালের পর শ্বাসকষ্ট এমন জায়গায় যায়, যে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সিঁড়ি দিয়েও উঠতে পারতেন না উনি। ব্যবহার করতে হত লিফট। এমনও দিন গিয়েছে, বুদ্ধবাবুর কনভয় আলিমুদ্দিনে পৌঁছনোর পর দেখা যায় লিফট খারাপ, তখন পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরে চলে আসতে হয় তাঁকে।