প্রয়াত হলেন জিম্বাবোয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। গত এপ্রিল মাস থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রায় ৪০ বছর ধরে জিম্বাবোয়েকে শাসন করেছিলেন রবার্ট মুগাবে। শেষ পর্যন্ত তাঁর সেনাবাহিনীই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১৭ সালে। তারপর সিঙ্গাপুরে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাড়ি থেকে খুব একটা বেরোতেন না। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। অবশেষে শুক্রবার মারা গেলেন জিম্বাবোয়ের প্রাক্তন একনায়ক।
শুক্রবার জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট নাঙ্গাগওয়া টুইটারে প্রাক্তন রাষ্ট্রনেতার মৃত্যু সংবাদ পোস্ট করেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘চূড়ান্ত শোকের সঙ্গে ঘোষণা করছি, জিম্বাবোয়ের প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কমরেড রবার্ট মুগাবে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার প্রতিমূর্তি, যিনি নিজের সারা জীবন দেশবাসীর মুক্তি ও শক্তিবৃদ্ধির জন্য উৎসর্গ করেছেন। আমাদের দেশ ও মহাদেশের প্রতি তাঁর অবদান ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।’
১৯৮০ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে জিম্বাবোয়ের ক্ষমতার মসনদে দীর্ঘ প্রায় ৪ দশক আসীন ছিলেন মুগাবে। ২০১৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে তিনি গদিচ্যূত হন। তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতন, ইচ্ছে মতো হত্যালীলা সংগঠন করা, নির্বাচনী এবং অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল অসংখ্যবার।
১৯২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন রবার্ট মুগাবে। আজীবন কম্যুনিস্ট ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সত্তরের দশকে তিনি তৎকালীন রোডেশিয়ার সংখ্যালঘু শ্বেতকায় সরকারের বিরুদ্ধে গোপনে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৭৯ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ঘোষণা করেন, গণতান্ত্রিক প্রধান শাসনের পথে চললে রোডেশিয়াকে স্বাধীন গণ্য করবে ব্রিটেন।
অতি বৃদ্ধ অবস্থাতেও ক্ষমতা আঁকড়ে ছিলেন। তাঁর নিজের জানু-পিএফ দলই চাইছিল তিনি গদি ছাড়ুন। পার্লামেন্টে তাঁকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তিনি অন্তত এক সপ্তাহ পদ ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী যখন তাঁকে সরিয়ে দিলে, তিনি বলেছিলেন, ‘সংবিধান বিরোধী কাজ হয়েছে। আমার নিজের দলের লোকই আমাকে বিট্রে করল’। তখনই তিনি ভেঙে পড়েন। অন্যদিকে মুগাবে বিদায় নিয়েছেন শুনে উল্লাসে ফেটে পড়ে জিম্বাবোয়ের ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ।