গত সোমবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ভারতীয় দল যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ হোয়াইট ওয়াশের স্বপ্ন দেখছে, তখনই নিজের দেশ থেকে এই দুঃসংবাদটা আসে। ভারতীয় দলের পেস বোলার মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা আদালত। কিন্তু তাতে শামির বোলিং-এর ধার একটুও কমেনি। বরং দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়ে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অন্যতম সেরা হয়েছেন। আর তারপরেই একটা সুখবর পেলেন শামি। এই গ্রেফতারি পরোয়ানার পরেও শামির পাশে দাঁড়ালো ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা বিসিসিআই। এদিন বোর্ডের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে শামির চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে না।
গত মঙ্গলবার ছিল মহম্মদ শামির জন্মদিন। বিসিসিআই-এর তরফে টুইট করে শুভেচ্ছাও জানানো হয় বিরাটের দলের ভন্যতম সেরা অস্ত্রকে। তারপরেই বোর্ডের এক কর্তা সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, “হ্যাঁ, আমরা জানি যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে। কিন্তু এই মুহূর্তে এর মধ্যে ঢোকার কোনও মানে নেই। চার্জশিট দেখার পর সিদ্ধান্ত নেব, কীভাবে এগোতে হবে না হবে। বিসিসিআইয়ের নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ করা হবে। তবে এখনই এই ব্যাপারে কিছু বলা ঠিক হবে না। তাই এইমুহূর্তে শামির চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে না।”
তবে গত বছর স্ত্রী হাসিন জাহানের অভিযোগের পরেই শামির চুক্তি বাতিল করেছিল বোর্ড। সেই ব্যাপারে ওই কর্তা সাফ জানান, “তখন বিষয়টা অন্যরকম ছিল। তখন শুধু গার্হস্থ্য হিংসা নয়, শামির বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটারও অভিযোগ উঠেছিল। তখন সিওএ যা ঠিক মনে করেছে, তাই করেছে। দুর্নীতি দমন শাখা প্রধান নীরজ কুমার বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ক্লিনচিট পান শামি। তারপরই তাঁর সঙ্গে ফের চুক্তি হয়। এক্ষেত্রে শুধু গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে শামির বিরুদ্ধে। তাই এখনই ওর চুক্তি বাতিল করার মতো বিশেষ কিছু হয়নি। সব দিক খতিয়ে দেখে তবেই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
গত বছরই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ফেরার পরে মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক, মারধর, হেনস্থা-র মতো একাধিক অভিযোগ করেন তিনি। অন্যদিকে শামি বারংবার দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু শামির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন হাসিন। হাসিনের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় শামি ও তাঁর দাদার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়৷ কিন্তু তারপর থেকে একবারও আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা আদালতে হাজিরা দেননি শামি৷ আর তারপরেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। এখন দেখার ভারতীয় দল দেশে ফেরার পর এই মামলার জল কোনদিকে গড়ায়।