বাংলার মানুষ যাতে তাঁদের নিজেদের কথা জানাতে পারেন তাই এক অনন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সগৌরবে ১ মাস সম্পন্ন করেছে ‘দিদিকে বলো’৷ এই এক মাসে বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন দিদিকে বলে৷ এবার ‘দিদিকে বলো’-তে একবার ফোন করতেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেলেন এক অসুস্থ কলেজ ছাত্রী৷
কালনা-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আজ দরিদ্র পরিবারগুলিকে বেঁচে থাকার দিশা দেখাচ্ছে। ব্লক স্তরে ওর পরিবারকে গোষ্ঠীর আওতায় এনে কার্ড পাওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়। কিন্তু প্রসেসিং সিস্টেমে দেরি হওয়ায় ওর কার্ড পেতে দেরি হচ্ছিল। কার্ড পাওয়ায় আমরা খুশি। অন্যভাবে পরিবারটির পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায় চেষ্টা করছি।
দিদিকে বলো-তে একবার ফোন করতেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেলেন কিডনি অসুখে আক্রান্ত এক কলেজ ছাত্রী৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, কালনা-২ ব্লকের পাঁচরকি গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী ঘোষ স্থানীয় তেহাট্টা সদানন্দ কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী। গত বছরে ধরা পড়ে তাঁর কিডনির অসুখ। বেঙ্গালুরু-সহ বহু জায়গায় চিকিৎসকরা জানান তাঁর দুটি কিডনির প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ কর্মক্ষমতা হারিয়েছে। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শে শুরু হয় ডায়ালিসিস৷ কিন্তু চিকিৎসার বিপুল ব্যয়ভার বহন করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন পেশায় লেদ মেকানিক প্রদীপ ঘোষ।
এই অবস্থায় ছাত্রীর জামাইবাবু কালনার বেগপুর এলাকার বাসিন্দা অমিত পাল দিন সাতেক আগে দিদিকে বলো ফোন নম্বরে সমস্যার কথা জানিয়ে ফোন করেন। ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে জানানো হয় দিন কয়েকের মধ্যে আপনার কাছে ফোন যাবে। এরপরই সোমবার ছাত্রীর বাবা প্রদীপ ঘোষের ফোন নম্বরে জেলাশাসকের দপ্তর থেকে ফোন আসে। বলা হয় আপনি মেয়েকে নিয়ে আসুন। কিন্তু ওই দিন যেতে না পারায় মঙ্গলবার জেলাশাসকের দপ্তরে হাজির হন প্রদীপবাবু। সেখান থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পান। এতে খুশি ছাত্রীর পরিবার।
ছাত্রীর বাবা প্রদীপ ঘোষ বলেন, গত বছর মেয়ের কিডনির অসুখ ধরা পড়ে। বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাই। কলকাতাতেও চিকিৎসা করাই। চিকিৎসকরা ডায়লিসিস করার পরামর্শ দেন। কিন্তু মেয়ের চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ আমার নেই। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়ে মেয়ের চিকিৎসার খরচের অনেকটাই লাঘব হবে। তবে, চিকিৎসকরা বলেছেন মেয়ের দুটি কিডনির পঞ্চাশ শতাংশ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। একটি কিডনি পাল্টানো অত্যন্ত জরুরি। আমি সকলের কাছে আবেদন করছি কেউ যদি কিডনি দিতে এগিয়ে আসেন তবে মেয়ে বাকি জীবনটা মেয়ে সুস্থ ভাবে কাটাতে পারবে৷