বৈজ্ঞানিক ভাবে ছক কষে একটা সময় পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রেখে সাফল্যের মুখ দেখছে বাংলাদেশ। মূলত খোকা ইলিশ বাঁচিয়েই বড় ইলিশের মুখ দেখছে বাংলাদেশের বাজার। বাংলাদেশের মাছবাজারে উঁকি দিলেই দেখা যাচ্ছে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ। পাওয়া যাচ্ছে তিন কেজি ওজনের ইলিশও।
৫–৭ বছর আগেও সাধারণের কাছে অনেকটা অধরা ছিল ইলিশ। বিশেষ করে বড় ইলিশ খুব কমই পাওয়া যেত। এখন তা নয়। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হল এটা? বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) জানিয়েছে, ইলিশের প্রজনন ঋতু আশ্বিন। আগে আশ্বিনের পূর্ণিমার আগের ও পরের ১০ দিন বড় ইলিশ ধরা বন্ধ থাকত। ২০১৬ সাল থেকে তা ২২ দিন করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, সারা বছরই কমবেশি ডিম হয় ইলিশের। কিন্তু আশ্বিন মাসের প্রথম পূর্ণিমায় ইলিশ প্রধানত ডিম ছাড়ে। ওই সময় ২২ দিন ইলিশ বিতরণ, বিপণন, পরিবহণ, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ হয়েছে। তাতেই ইলিশের জোগান বেড়েছে। তাছাড়া সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সুফল মিলছে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি নির্ভর করে এর প্রজনন, ছোট ইলিশ বাঁচানো এবং মাছ ধরার পরিমাণের ওপর। গত অর্থবর্ষে দেশে ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে ৫ লক্ষ ১৭ হাজার টন। আগের অর্থবর্ষের চেয়ে ২১ হাজার টন বেশি। এক দশক আগে ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল মাত্র ২ লক্ষ ৯০ হাজার টন।
বর্তমানে দেশের ১২৫টি উপজেলার নদ–নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ১০ বছর আগে ২১টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলি খান খসরু বলেছেন, দেশে ইলিশের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। এই ধারা ধরে রাখতে হবে। গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে বিজ্ঞানীদের।
বাজারভেদে ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম হাজার টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ৭০০ টাকার আশপাশে। দাম কমেছে ছোট ও মাঝারি ইলিশের। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। ৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম ৩৫০-৪০০ টাকা।