গত শনিবার চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশ করেছে আসামের বিজেপি সরকার। জানা গেছে, সেই নাগরিকপঞ্জি থেকে ১৯ লক্ষেরও বেশি নাম বাদ পড়েছে৷ সেই নিয়ে গোটা দেশে শুরু হয়েছে তোলপাড়৷ প্রাথমিকভাবে এইসব বাদ পড়া মানুষদের পাশে থাকার আশ্বাস জানিয়েছিলেন আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷
তবে দুদিন কাটতেই ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে নিজের ভোল পাল্টে ফেললেন তিনি৷ একাধিক জাতীয় চ্যানেল ও পত্রিকাকে সাক্ষাৎ দিতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট জানালেন এই ১৯ লক্ষের মধ্যে অন্ততপক্ষে ১৩-১৪ লাখ মানুষের দায়িত্ব নিতেই হবে বাংলাদেশকে৷ তাঁর এ’হেন মন্তব্যে ফের নতুন করে বিতর্ক ডেকে আনল তা বলাই বাহুল্য৷
বিজেপি সরকার অবশ্য এই বক্তব্যকে তাঁর ব্যক্তিগত মত বলে পাশ কাটিয়েছে৷ হিমন্তর বক্তব্য, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়াদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলবে তাঁর সরকার। তাঁর সোজা কথা, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলব এবং তাঁদের লোকদের ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করব। কিন্তু যতদিন ফিরিয়ে না নেওয়া হচ্ছে, ততদিন আমরা তাঁদের ভোটাধিকার দেব না, তবে বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ সরকার ভারতের বন্ধু। এই বিষয়ে তাঁরা আমাদের সহযোগিতা করবে।
এনআরসি তালিকায় নাম না থাকা লোকেদের ফেরত পাঠাতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়াও অনুসরণ করা হবে বলে জানান কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া আসামের দাপুটে নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ তাঁর কথায়, এনআরসি তালিকায় নাম নেই মানে এটা নয় যে, তাঁদের বিদেশি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাঁদের ব্যাপারে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত ভারতের কোনও রাজনৈতিক কাজে তাঁদের অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
এদিকে জাতীয় ইংরাজি পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসামের অর্থমন্ত্রী বলেন, বিজেপি বৈধ হিন্দু অভিবাসীদের পাশে থাকবে এবং আমরা তাঁদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করব। যাতে পরবর্তী সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারি।
অন্যদিকে, রবিবার ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আসামের এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে ভারত অঙ্গীকার করেছে। এনআরসি থেকে বাদপড়া নাগরিকরা বাংলাদেশি নয় বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ৩১ আগস্টের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় ঠাঁই হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ লোকের। আর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার মানুষ।