সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির যে অস্ত্রগুলোর ওপর ভর করেছিল তার মধ্যে অন্যতম হল এনআরসি। সারা দেশে এনআরসি চালু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। গতকাল আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী তালিকা প্রকাশ করে সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে মোদী সরকার। আর তারপর থেকেই বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বরা আওয়াজ তুলছে তাঁদের রাজ্যে এনআরসি দাবি নিয়ে। তবে কি সারা দেশেই এইবার বহু মানুষ ঘর ছাড়া হতে চলেছেন?
কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা মনে করছেন, বিজেপি এনআরসি-কে সামনে রেখে অর্থনীতির দুরবস্থা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করবে। মেরুকরণের রাজনীতি করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র বলছে, ২০২০-তে এনপিআর বা ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার চূড়ান্ত হবে। তা আগামী দিনে গোটা দেশে এনআরসি-র ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
আর এইনিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ‘বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী’-দের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাবেন। তবে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন করে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেওয়া হবে। অন্যদিকে দিল্লীতে এনআরসি-র দাবি তুলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির দাবি, ‘‘দিল্লীতে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তাই এখানেও এনআরসি দরকার।’’ একই সুরে তেলঙ্গানায় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা রাজা সিংহের দাবি, তেলঙ্গানাতেও এনআরসি হোক। এমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দিকে আঙুল তুলে তাঁর অভিযোগ, হায়দরাবাদের সাংসদ নিজের ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিচ্ছেন। ওয়াইসির পাল্টা যুক্তি, ‘‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর মিথ এ বার উধাও। অসমের চূড়ান্ত তালিকা থেকে ১৯ লক্ষের মতো মানুষ বাদ পড়েছেন। এ বার অমিত শাহ ব্যাখ্যা দিন, তিনি কোথা থেকে ৪০ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী পেয়েছিলেন?’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি যদি শুধু হিন্দুদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়, তা সমানাধিকারের নীতির বিরোধী হবে।