গত বছর ২রা সেপ্টেম্বর। কলকাতা লীগের বড়ম্যাচে শেষ ডার্বি খেলেছিলেন। সেই ডার্বিতে তিনি ছিলেন সুভাষ ভৌমিকের তুরুপের তাস। আর আজ তিনি ডার্বির উত্তেজনা থেকে শত যোজন দূরে। তাঁকে ঘিরে সেই উন্মাদনাও নেই। তিনি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের একসময়ের নয়নের মণি মাহমুদ আল আমনা। আজকের ডার্বি তিনি দেখতে বসবেন একদম টেনশন ফ্রি হয়ে। বড় ম্যাচের উত্তেজনা তাঁকে আর ছুঁয়ে যায় না। দার্শনিক আমনা এদিন বলছিলেন, ‘‘রবিবার আমি ভাল ফুটবল দেখতে চাইব। আগে যখন ডার্বিতে নেমেছি, তখন দলের ভাল-মন্দ আমার মাথায় ঘুরপাক খেত। এখন তো আমি ডার্বি থেকে অনেক দূরে। তাই সেই টেনশন আর আমাকে গ্রাস করে না।’’
সে বারের কলকাতা ফুটবল লিগের ইস্ট-মোহন ম্যাচ এখনও জীবন্ত ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়েই দু’গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার মিনিট খানেক আগে ইস্টবেঙ্গলের বিশ্বকাপার জনি একোস্টা একটি গোল করে ব্যবধান কমান। তারপর দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ইস্টবেঙ্গল। শেষ পর্যন্ত কলকাতা লিগের ডার্বি ঢলে পড়েছিল ড্রয়ের কোলে।
তবে সেই ম্যাচ ড্র হলেও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ভুলতে পারেননি দ্বিতীয়ার্ধে আমনার নেতৃত্বের ইস্টবেঙ্গলের সেই মরিয়া লড়াই। একটা সময়ে তিনি একাই মোহনবাগান রক্ষণের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। সেই ম্যাচ প্রসঙ্গে বর্তমানে সাদার্ন সমিতির মিশরীয় তারকা বলছিলেন, ‘‘সে দিন ম্যাচে ফেরা সহজ ছিল না। প্রথমার্ধেই আমরা দু’ গোলে পিছিয়ে পড়েছিলাম। সেই সময়ে মানসিক জোরের খুব দরকার ছিল। আমরা দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম।’’
তার পরেই অতীত আর বর্তমানের তুলনা নিজেই টেনে বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরে আমি যখন ডার্বিতে নেমেছি, সেই সময় আর এখনকার মধ্যে কোনও তুলনাই হয় না। গত দু’ টি ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল জিতেছে। ফলে ইস্টবেঙ্গলই এগিয়ে থেকে শুরু করবে রবিবার। তা ছাড়া ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মোহনবাগান হার মেনেছে। ডার্বি জিতলে সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ পড়বে। আমি বলব, চাপে রয়েছে মোহনবাগানই। ইস্টবেঙ্গলের চাপ কিন্তু কম।’’
তা হলে কি রবিবারের ডার্বিতে এগিয়ে আপনার পুরনো দল? তখন আমনা বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলে যখন খেলতাম তখন বলতাম, এই ম্যাচ পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। নির্দিষ্ট দিন যে ভাল খেলবে, সেই দলই ম্যাচ জিতবে। তবে এখন আমার মনে হয়, ইস্টবেঙ্গল তুলনামূলক ভাবে ম্যাচটায় এগিয়ে থাকবে। কারণ হাইমে কোলাডো, কাশিম আইদারারা গতবারও খেলেছে। সে দিক থেকে দেখলে মোহনবাগানের স্প্যানিশ ফুটবলারদের কিন্তু একটু সময় দিতে হবে। কোচও নতুন।’’ আর আমনার এই ব্যাখ্যাতেই পরিষ্কার রবিবাসরীয় ডার্বিতে তিনি এগিয়ে রাখছেন পুরোনো ক্লাব ইস্টবেঙ্গলকেই।