গত ৫ আগস্ট সংসদে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজের ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে বিল পাশ করিয়ে কাশ্মীর থেকে লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার ঘোষণা করেন তিনি। আর তারপর থেকেই কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ভূস্বর্গ। নেই ইন্টারনেট পরিষেবা। বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ-দোকানপাট সমস্ত কিছুই। শুধু তাই নয়। উপত্যকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থা এখনও ভয়ঙ্কর।
তবে এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলায় এবার গ্রেফতার করা হল কাশ্মীরের একটি সরকারি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসককে। গত সোমবার শ্রীনগরের লালচক স্কোয়্যারে ধর্নায় বসেছিলেন চিকিৎসক ওমর সালিম। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘আমি প্রতিবাদে বসিনি। সরকারের কাছে এটা আমার অনুরোধ। এই মুহূর্তে কাশ্মীরের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। যোগাযোগ এবং যাতায়ত ব্যবস্থায় এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, মানবাধিকার সংকট দেখা দেবে গোটা উপত্যকায়।’
শুধু তাই নয়। তিনি আরও বলেন যে, ‘সাধারণ মানুষকে ওষুধও কিনতে হচ্ছে। কেমোথেরাপি, ডায়ালিসিস করাতে নিজেদের পকেট থেকেই টাকা দিতে হচ্ছে তাঁদের।’ ধর্নার মঞ্চে সাংবাদিকদের সঙ্গে এই কথাগুলি বলার সময়েই তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, কাশ্মীরে আসল ছবি যাতে দেশবাসীর সামনে চলে না আসে, সে কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে সালিমকে। এভাবেই আপাতত তাঁর মুখবন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জনস্বাস্থ্য যোজনার আওতায় সাধারণ মানুষ বিনা পয়সায় চিকিৎসার সুযোগ পান। এই যোজনার আওতায় যাঁরা পড়েন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে একটি স্মার্ট কার্ড থাকে। সেই কার্ড দেখিয়েই রোগীরা বিনা পয়সায় চিকিৎসা করাতে পারেন। এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরের বেশ কিছু অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় উপত্যকার সাধারণ মানুষ বিনা পয়সায় চিকিৎসার সুযোগ হারাচ্ছেন। ফলে প্রচুর টাকা খরচ করেই তাঁদের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে উপত্যকাবাসীকে।