এর আগে স্টেটব্যাঙ্কের সঙ্গে সব কটি শাখা ব্যঙ্ককে মিলিয়ে দেওয়ার ফলে স্টেট ব্যাঙ্ক এখন দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এবার সেই একই পথে হেঁটে দেশের সব বড় ব্যাঙ্ককেই একাধিক ছাতার তলায় আনা হল। এর ফলে দেশের ব্যাঙ্কিং শিল্পের উন্নতি হবে। শুক্রবার দেশের ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে যুক্ত করে ১২ টি ব্যাঙ্ক বানানোর কথা ঘোষণা করতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীরা এতে খুশি নন। আজ, শনিবার সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ জানাবেন তাঁরা।
ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরি বলেন, এই সংযুক্তিকরণের ফলে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম আরও দুর্বল হবে। সরকার বলছে সংযুক্তিকরণের ফলে ব্যাঙ্কগুলি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে হবে উল্টো। এদিন ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের ন’টি ইউনিয়ন প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে। এ নিয়ে দেবাশিস বলেন, আমরা ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে। এর জন্যই আজ পর্যন্ত বহু মানুষ ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের বাইরে থাকতে পছন্দ করেন। অতীতের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যখনই মার্জার হয়েছে, ব্যাঙ্কের নানা ব্র্যাঞ্চ ও অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবারই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। দেবাশিসের কথায়, ব্যাঙ্কগুলি ঋণ মকুব করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে সুবিধা হচ্ছে বৃহৎ ব্যবসার। অতীতে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছিল। তখন ছোট ব্যাঙ্কগুলিই দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে। কয়েকটি ব্যাঙ্ক জুড়ে বড় ব্যাঙ্ক তৈরি করলে তা হবে না। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি দেবীদাসও বলেন, ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের ওপরে এত গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। এখন ব্যাঙ্কের যা সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হল স্থিতিশীলতা।
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক – খুব তাড়াতাড়ি মুছে যাবে পরিচিত এইসব নাম। থেকে যাবে হাতে গোণা কয়েকটি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা ২৭ থেকে ১২তে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের। তাই ব্যাঙ্কগুলি মিশে গেলে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, এ নিয়ে চিন্তিত কর্মীরা। সংযুক্তিকরণের জেরে কর্মীদের চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিলেও চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না তাঁরা৷