আসামে শনিবার সকালেই প্রকাশিত হয়েছে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা। বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। কিন্তু এরপরেও খুশি নন আসামের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা। বরং হতাশ তিনি। মনে করছেন, এই তালিকার সাহায্যে আদৌ বিদেশিদের তাড়ানো যাবে না। যদিও তাঁর দল বিজেপিই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি করতে সবচেয়ে উৎসাহ দেখিয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে হেমন্ত বিশ্বশর্মা এদিন সাফ বললেন, ‘যারা রাম আর কৃষ্ণের নাম করে, তাঁরা এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। অথচ, অন্য ধর্মের মানুষের নাম তালিকায় রয়েছে। এনআরসির সঙ্গে আমাদের যে আবেগ জড়িত ছিল, তা আর এখন নেই। কারণ, বাংলাদেশে লাগোয়া দক্ষিণ শালমারা জেলায় কম সংখ্যক আবেদনকারীদের নাম কম কাটা গিয়েছে। অথচ কার্বি আংলং জেলা, যেটা কিনা উপজাতি অধ্যুষিত, সেখানে বেশি সংখ্যক আবেদনকারীর নাম এনআরসি তালিকায় ওঠেনি। ফলে প্রক্রিয়ায় গলদ রয়েছে তা নিশ্চিত’। অসমের উপমুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, এনআরসির এই তালিকাই নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ নয়। প্রয়োজনে সরকার নতুন কোনও আইন আনতে পারে বা এই বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করানো হতে পারে। কারণ, হিন্দু বাঙালিদের নাম যদি এনআরসির তালিকা থেকে কাটা যায়, তাহলে সেটা বিজেপির ভোটব্যঙ্কের জন্যও ধাক্কা হবে।
একইসঙ্গে তালিকা প্রকাশের পর এনআরসি নিয়ে চূড়ান্ত হতাশাই প্রকাশ করেছেন আসামের বিজেপি মন্ত্রী। হেমন্ত বিশ্বশর্মার কথায়, ‘এনআরসি-র খসড়া বেরোনর পরেই আমরা তার ওপরে আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলাম। কারণ তাতে অনেক ভারতীয়ের নাম বাদ পড়েছে। এরপরে কীভাবে বলা যায়, এই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি অসম থেকে বিদেশি বিতাড়নে সাহায্য করবে? তাছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত দক্ষিণ সালমারা এবং ধুবড়ি জেলা থেকে মানুষ বাদ পড়েছে সবচেয়ে কম। কিন্তু ভূমিপুত্র জেলায় বাদ পড়ার হার খুবই বেশি। এমনটা কী করে হয়? আমি জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আদৌ আগ্রহী নই’।