গতকাল এই মরশুমের প্রথম ডার্বি। শহর পেরিয়ে জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে তার উন্মাদনা। এই ডার্বিতে দু’দলের মধ্যেই স্প্যানিশ ফুটবলারদের আধিক্য। সেইরকমই একজন হলেন ফ্রান হ্যাভিয়ে গনজালেজ। মোহনবাগান দলের অভিভাবকও যেন তিনিই। গতবার সোনি নর্দের পিঠে উঠেছিল ৫০ নম্বর জার্সি। এ বার সেই জার্সিটা পরছেন স্পেনের এই ফুটবলার। সেই প্রসঙ্গে ফ্রানে জানান, ‘আমি অন্যান্য ক্লাবে পাঁচ নম্বর জার্সি পরে খেলতাম। এখানে দেরি করে আসায় আমাকে ৫০ নম্বর জার্সি দেওয়া হয়েছে। বলতে পারেন, আমি এখন আগের থেকেও দশ গুণ শক্তিশালী। আমি জানি, গতবার সোনি ৫০ নম্বর জার্সি পরে খেলত। গোটা দলটার অভিভাবক ছিল সোনিই। বলতে পারেন আমিও সেই ভূমিকাই পালন করছি। আমি চাই, সবাই আমাকে চিনুন। শুধু ফুটবলার হিসেবে নয়, এক জন মানুষ হিসেবেও আমাকে জানাটা দরকার।’
কলকাতা শহরটাকে তিনি কয়েকদিনেই আপন করে নিয়েছেন। তাঁর কথাতেই, ‘না, না। সমস্যা হবে কেন? এনজয় করছি। ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছি কলকাতার জলহাওয়ার সঙ্গে। শহরটাকেও বোঝার চেষ্টা করছি। এখানকার মানুষজনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। ভালই লাগছে।’ তবে ডুরান্ড কাপের হার ও কলকাতা লীগের শুরুতে দলের ব্যর্থতা নিয়ে তিনি ভেঙে না পড়ার কথাই বলছেন। তিনি জানান, ‘ ডার্বির প্রস্তুতি ঠিকই আছে। আমরা ঠিকঠাক পথেই এগোচ্ছি। আপনাকে বলতে পারি, আমরা আত্মবিশ্বাসী। ডুরান্ড কাপ আমরা হেরে গিয়েছি। গোকুলমের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচের দু’দিন আগে আমি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এ কথা অনেকেই জানেন না। আমার পক্ষে পুরো ম্যাচ খেলা সম্ভব ছিল না। পরিবর্ত হিসেবে আমাকে নামান কোচ। আমি চেষ্টা করেছি। খেলায় হার-জিত রয়েছে। একদিন আপনি জিতবেন। একদিন হারবেন। সে দিন আমাদের ভাগ্য খারাপ ছিল। তাই ম্যাচটা জিততে পারিনি।’
ডার্বিকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন তিনি। এই ম্যাচের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে তিনি। পাশাপাশি মোহনবাগানের দলটা যে বেশ ভালো হয়েছে সেটাও তিনি জানান। পাশাপাশি তাঁর এই আত্মবিশ্বাসটা তিনি সমর্থকদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁর কথায়, ‘রবিবারের ম্যাচে আমরা ভালই খেলব। আমি দলের সবাইকে বলছি, ম্যাচটা উপভোগ করো। অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ, তরুণ ফুটবলারদের বারবার বলছি, চাপ নেবে না। মুহূর্তটা উপভোগ কর। সমর্থকদের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়। ওদের আবেগটা অনুভব করতে পারি। এই ডার্বিটা নিয়ে দারুণ উত্তেজিত সমর্থকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই আমাকে মেসেজ করছে। আমি ভক্তদের বলেছি, নিজেকে উজাড় করে দেব।’
ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান দুই দলেই স্প্যানিশ খেলোয়াড়দের আধিক্য। তারফলে বোরহা গোমেজ, হাইমে স্যান্টোস কোলাডো, মার্কোস এসপারা মত ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা যে তাঁর বন্ধু হবে সেটা অজানা নয় কারোর। সেই বন্ধুদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে তিনি জানালেন, ‘বোরহাকে আমি রিয়াল মাদ্রিদের অ্যাকাডেমির সময় থেকেই চিনি। ও আমার থেকে এক বছরের বড়। মাঠের বাইরে ওরা আমার বন্ধু। কিন্তু, রবিবার ওরা কেউ বন্ধু নয়।’ রবিবারের ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তিনি। সেই ছন্দ নিয়েই কাল যুবভারতী মানতাবেন এই তরুণ স্প্যানিশ খেলোয়াড়।