প্রকাশিত হল আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা। বাদ পড়ল ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। খসড়া তালিকায় এই সংখ্যাটা ছিল ৪১ লক্ষ। নতুন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৩ কোটি ১১ লক্ষ মানুষ। এনআরসি দফতর সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে।
শনিবার সকাল দশটায় বের করা হয়েছে এই এনআরসি তালিকা। তার আগে থেকে উৎকণ্ঠা দানা বাঁধছিল আসামজুড়ে। ব্যবস্থা করা হয়েছিল কড়া নিরাপত্তার। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল জানিয়েছেন, যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাঁদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। আগামী ১২০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন জানাতে পারবেন তাঁরা।
http://www.nrcassam.nic.in এই ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে নিজেদের নামের তালিকা দেখতে পাবেন নাগরিকরা। যাঁদের ইন্টারনেট সংযোগ নেই তাঁরা সরকার পরিচালিত এনআরসি সেবাকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের স্টেটাস দেখতে পারবেন বলে আসাম সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। এছাড়াও আবেনদনকারীদের জন্য বিশেষ টোল ফ্রি নম্বরেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে (আসামের জন্য-১৫০১৭, অসমের বাইরের জন্য ১৮০০৩৪৫৩৭৬২) ।
তালিকায় নাম না থাকলেও অবশ্য এখনই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছে সরকার। রাজ্যজুড়ে এক হাজার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। যেখানে ‘বিদেশি’ তকমাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা গিয়ে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে তথ্য পেশ করতে পারবেন। এর সময়সীমাও বাড়িয়ে ৬০ দিনের বদলে ১২০দিন করা হয়েছে। কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল যে খুব স্বস্তি দিতে পারে, তেমনটা নয়। এভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণে অনেক আইনি পদ্ধতি রয়েছে। প্রচুর অর্থব্যয়ও হওয়ার আশঙ্কা। তাই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার।
তালিকা প্রকাশের পর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা করেই গোটা রাজ্যকে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। রাজ্য জুড়ে ৬০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আরও ২ হাজার আধাসেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। অসম পুলিশের তরফ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, যে সব ব্যক্তিদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে না, তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। পাশাপাশি তারা এই আহ্বানও জানিয়েছে, ‘গুজবে কান দেবেন না। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সমাজে একটা বিভ্রান্তি ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু অসামাজিক শক্তি। নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য’।