মাঠে যখন তাঁরা খেলতে নামেন তখন তাঁদের পায়ের কাজ মুগ্ধ করে রাখে সকলকে। মাঠের ৯০ মিনিটের লড়াইতে তাঁরা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। একজনকে বিদ্রুপ করা হয় আন্তর্জাতিক ট্রফি না পাওয়ার জন্য, অন্যজনকে শুনতে হয় তিনি নাকি কমপ্লিট ফুটবলার হয়ে উঠতে পারেননি। ঝগড়া চলতে থাকে ফ্যানেদের মধ্যে কে বেশি ভাল ফুটবলার সেই নিয়ে। একজন হ্যাটট্রিক করলে অপরজনের থেকেও হ্যাটট্রিকের আশায় থাকেন তাঁর ভক্তরা।মাঠের বাইরে মুখোমুখি দেখা হলেও এড়িয়ে গিয়েছেন একে অন্যকে। এবার ফের দেখা হল দুই তারকার। তাঁরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এবং লিওনেল মেসি।
এবারে এই দুই মহাতারকার দেখা হওয়া অন্যান্য বারের তুলনায় ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এবারে প্রাণখোলা আড্ডা, হাসি-মজা হল! আর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার জায়গাটা হাবেভাবে বুঝিয়েও দিলেন! চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র-তে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার দু’জনই উপস্থিত ছিলেন মোনাকোয়। এর আগে একটি সাক্ষাৎকারে পর্তুগিজ মহাতারকা জানিয়েছেন কীভাবে মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাঁদের দু’জনকেই ভাল খেলতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তবে ওই সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হল মেসির সঙ্গে নৈশভোজে কখনও না যাওয়া নিয়ে রোনাল্ডোর আক্ষেপ! আর সেখানে রোনাল্ডো পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ভবিষ্যতে নৈশভোজে যাওয়ার ইচ্ছের কথাও।
বৃহস্পতিবারই এ বারের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ নির্বাচন হয়ে গেল। সেই অনুষ্ঠানে দেওয়া হল গত বারের সেরার পুরস্কার। মেসি সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার পেলেও, রোনাল্ডোর ভাগ্যে কোনও পুরস্কার জোটেনি। সেই অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসেছিলেন ফুটবলের ইতিহাসের সেরা দুই খেলোয়াড়। নিজেদের মধ্যে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবেই কথা বলতে দেখা যায় তাঁদের। সেখানে প্রশ্ন করা হলে রোনাল্ডো বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে এই মঞ্চ ভাগ করে নিচ্ছি। আমরা দু’জন ছাড়া আর কেউ নেই এত বছরে। এটা সহজ নয়। আমাদের সম্পর্ক দারুণ। যদিও আমরা কোনও দিন এক সঙ্গে ডিনারে যাইনি, কিন্তু সেটা দেখা যেতেই পারে ভবিষ্যতে।”
অবসর প্রসঙ্গে কিছু দিন আগে রোনাল্ডো বলেছিলেন যে তিনি এই মরসুমেও অবসর নিতে পারেন আবার ৪০-৪১ বছর বয়স অবধি খেলা চালিয়েও যেতে পারেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি আর মেসি এক সঙ্গে অবসর নেবেন কিনা। রোনাল্ডো বলেন, “লিও আমার থেকে তিন বছরের ছোট। তবে আমি আমার বয়সের তুলনায় অনেক ফিট। চেষ্টা করলে হয়তো খেলা চালিয়ে যেতে পারি। তাই আগামী বছরও আমাকে এখানে দেখা যেতে পারে, তার পরের বছরও, তার পরের বছরও। তাই যাঁরা আমাকে পছন্দ করেননা, তাঁদের কিছু করার নেই। আমাকে এখানে দেখা যাবেই।”
এবার মেসি ও রোনাল্ডোকে পিছনে ফেলে উয়েফার বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলার হিসেবে নির্বাচিত হন লিভারপুলের সেন্টার ব্যাক ভার্জিল ভ্যান ডিক। মহিলাদের পুরস্কারটি পান লুসি ব্রোঞ্জ। এর আগে আটবারে পাঁচবারই মেসি ও রোনাল্ডো তাঁদের মধ্যে পুরস্কারটি ভাগ করে নিয়েছিলেন। তাঁরা ছাড়াও অ্যান্দ্রেজ ইনিয়েস্তা (২০১২), ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি (২০১৩) এবং লুকা মদরিচ (২০১৮) এই পুরস্কার পেয়েছেন।