লোকসভা নির্বাচনে দলের কয়েকটি আসন কমলেও ফের নব উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভাকে পাখির চোখ করে আগের মতোই জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করে কাজের পর্যালোচনায় মন দিয়েছেন তিনি। দীঘা, বর্ধমানের, হুগলি- যেখানেই গেছেন, সেখানে একটি কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মানুষ কাজ করাটাই সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি এবার দলের জেলা সভাপতি ও সাংসদদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসছেন মমতা।
জানা গেছে, এই বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রী নেতাদের কথা শুনবেন, তিনি নিজেও জরুরি পরামর্শ দেবেন। সোমবার তৃণমূল ভবনে বৈঠকটি ডাকা হয়েছে। কোথায় সংগঠনের কাজ ভাল হয়েছে, কোথায় খামতি রয়েছে সব বিষয়ে জানতে চাইবেন দলনেত্রী। তাই নেতারা সকলেই নিজের এলাকার সাংগঠনিক রিপোর্ট তৈরি করে নিয়ে সেখানে যাচ্ছেন। দলের সংগঠনকে চাঙ্গা করা যেমন এই বৈঠকের উদ্দেশ্য, তেমনই বিজেপি ‘ষড়যন্ত্র’ এবং ‘অপপ্রচার’কে মোকাবিলা করার বিষয় নিয়েও কথা হবে।
সম্প্রতি এই অভিযোগ বারবারই উঠছে যে, রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা বাঁধানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। কীভাবে এই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা হবে, বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে। অভিযোগ মিলেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়িয়ে বিজেপি রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে, রাজ্যের শান্তি নষ্ট হয়। সোমবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয় মোকাবিলা করবার পরামর্শ দেবেন। দলের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিবাদ গাইডলাইন বলবেন। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটে ফল বেরনোর পর তৃণমূল ভবনেই জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, ‘হতাশ হবার কিছু নেই। দল কিন্তু ঘুরে দাঁড়াবেই।’ সেই আশ্বাসবাণী অনেকাংশেই সত্য হয়েছে।
শুধু তাই নয়। ইতিমধ্যেই হিট তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগ কর্মসূচী। বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচীর একমাস পূর্ণ হওয়ায় মমতা টুইট করে জানিয়েছেন, ‘দিদিকে বলো এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ বিপুল সাড়া দিয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ। গত ৩০ দিনে ১০ লক্ষের বেশি মানুষ আমাদের কাছে পৌঁছেছেন। তাঁরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন ও অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। এই সমর্থন ও স্বীকৃতির জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের পরামর্শ আমরা নজরে এনেছি। খুব দ্রুত যতটা সম্ভব তাঁদের অভিযোগ সমাধানের জন্য আমরা সক্রিয় হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’