বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে গাড়ি শিল্পকে। গত ১৯ বছরের মধ্যে সব থেকে কম গাড়ি বিক্রি হয়েছে এই জুলাইতে। কাজ হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী। শুধু গাড়ি শিল্পে নয়, ধস নেমেছে সব শিল্পেই। কর্ণাটকে বিপন্ন ছোট-মাঝারি কারখানার ৩০ লক্ষ কর্মী। এই তথ্য ফের প্রমাণ করে দিল মোদীর আচ্ছে দিন আসলে কতবড় জুমলা।
ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারারস অর্গানাইজেশন তাঁদের সমীক্ষা রিপোর্টে এই বেহাল চিত্র তুলে ধরে। মোদী সরকারের নতুন বাজেটে ক্ষরা কাটেইনি উলটে আরও বেড়েছে। নির্বাচনের পরে শুধু কর্ণাটকেই ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পে সংকট আরও বেড়েছে। রাজ্যেই কাজ হারাতে চলেছেন প্রায় ৩০ লক্ষ কর্মী।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র এসএম হুসেন বলেন, “ রাজ্যে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্প ইউনিটের সংখ্যা প্রায় প্রায় ৬ লক্ষ। যাতে যুক্ত আছেন প্রায় ৭০ লক্ষ কর্মী। মন্দার জেরে কাজ হারাতে চলেছেন ৩০ লক্ষ কর্মী”। তিনি আরও বলেন, “ ভারত এবং বিদেশের বাজার দুই দিক থেকেই মন্দায় আক্রান্ত এই শিল্প। গাড়ি শিল্পে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বহু ক্ষুদ্র ছোট শিল্প। বরাত না পেয়ে এমন বহু সংস্থা বন্ধ হয়ে গেছে”।
হুসেন বলেন, “ দেশের বড় বড় গাড়ি কারখানা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। দেশের গাড়ি শিল্পের ৪০% যন্ত্রপাতির উৎপাদন হয় কর্ণাটকে। উৎপাদন বন্ধ হওয়ার ফলে গত দুই মাসে ১ লক্ষ মানুষ কাজ হারালেন আরও ২৫-৩০ লক্ষ মানুষের যে কোনও মুহূর্তে কাজ চলে যেতে পারে”।
ওই সংগঠনটি জানিয়েছে, নোট বাতিলের পরে বাজারে কার্যত ধস নেমে আসে। এর মধ্যে পণ্য পরিষেবা করের বোঝা আরও খারাপ করে মানুষের হাল। ২০১৫-১৬ সালে যদি ১০০টি ছোট এবং মাঝারি শিল্প মুনাফা লাভ করে তো ২০১৮তে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৩০টিতে। কিন্তু তবুও কেন্দ্রের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি শিল্প বাঁচাতে। সম্প্রতি মন্দা ঠেকাতে শিল্পে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তাতেই শিল্প সংকটের চেহারা আরও প্রকট হয়েছে।