মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে, ‘আর্থিক সংস্কারের’ নামে নামে এবার ৪২ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ করতে চায় কেন্দ্র। তারপরই সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, রেল এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই তেজস এক্সপ্রেসকে অন্য সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে রেল। আবার গত বুধবারই খুচরো ব্যবসা, কয়লা খননের মতো ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নীর শর্ত শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। এবার বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রেও বিদেশি লগ্নীর দরজা হাট করে দিতে চাইছে মোদী সরকার।
গতকালই বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নীর ছাড়পত্র দেওয়ার প্রশ্নে বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী জানিয়েছেন, সরকার খোলা মনে এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। একইসঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের বিষয়েও যে মোদী সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিমানমন্ত্রী। প্রশ্ন উঠছে, এয়ার ইন্ডিয়ার ৯৫ শতাংশ মালিকানা বেচে ভাল দাম পেতেই কি বিমান সংস্থায় ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নীর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ভাবছে মোদী সরকার? পুরী বলেছেন, ‘সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কম সময়ে, যথা সম্ভব বেশি দর পেতে হবে। অনেকেই এয়ার ইন্ডিয়া অধিগ্রহণে উৎসাহী। যারা কিনবে তারা ভাগ্যবান হবে। বেসরকারি সংস্থার নীতি মেনে ব্যবসা চালাতে পারবে।’
উল্লেখ্য, গতমাসে দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেটেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, সরকার বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে আরও বেশি বিদেশি লগ্নীর দরজা খুলতে আগ্রহী। এখন বিদেশি সংস্থাগুলি এ দেশের বিমান সংস্থায় ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত লগ্নী করতে পারে। ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নীর ছাড়পত্র দিলে বিদেশি সংস্থাগুলিও এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য দর হাঁকতে পারবে। গত বছর ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬ শতাংশ মালিকানা বেচতে গিয়েও ব্যর্থ হয় মোদী সরকার। তবে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতেই এবার ৯৫ শতাংশ মালিকানাই বেচে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা।