একের পর এক জনকল্যাণকর প্রকল্পের ঘোষণা করেই থেমে থাকেন না তিনি। কেউ যাতে সেই সকল সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকেও সর্বদা কড়া নজর তাঁর। সে কারণেই জনগণের থেকে নেওয়া কাটমানি ফেরত দিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘কেউ দলের নাম করে টাকা তুললে তাঁকে গ্রেফতার করিয়ে দেব। প্রশাসন কঠোর হাতে এর মোকাবিলা করবে।’ কিন্তু এক শ্রেণীর মানুষ এ নিয়েও নোংরা রাজনীতি শুরু করায় এবার পাল্টা দিতে মমতা প্রশ্ন তুললেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে যারা সরব, তারা রাফাল দুর্নীতি এবং কালো টাকা নিয়ে চুপ কেন?
প্রসঙ্গত, গতকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে দলনেত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় বলি মানুষকে পরিষেবা দেবে। কিন্তু কারও থেকে সাহায্য নেবে না। উপায় নেই বলে ভোটের সময় ভিক্ষা চাইতে হয়। তাও বুঝে শুনে করি।’ তিনি জানান, তাঁর দলের কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে কাটমানি ফেরতের দাবিতে রাজ্যজুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তার সুযোগ নিয়েছে বিরোধীরা। এরপরেই মমতা স্পষ্ট বলেন, ‘যদিও অন্যায়, তবে কেউ একটা বাড়ি করতে গিয়ে ১০টাকা নিলে, তুমি তাঁর বাড়িতে গিয়ে কাটমানি ফেরত চাইছ। কিন্তু রাফালে একটা প্লেন কিনতে কত হাজার হাজার কোটি টাকা ব্ল্যাকমানি খাচ্ছে, তা তো কেউ একবারও বলছে না!’
এই প্রসঙ্গ টেনে গেরুয়া শিবিরকেও বিঁধতে ছাড়েননি তিনি। বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘লোকের থেকে পাঁচ টাকা নিলে চোখে পড়ে। আলুর দাম ৫০ পয়সা বাড়লে চোখে পড়ে। কিন্তু হীরের দাম কোটি টাকা হলে চোখে পড়ে না! কারণ আপনারা হীরের কারবারি, আলুর কারবারি নন।’ শুধু তাই নয়। লোকসভা ভোটে বিজেপির দুর্নীতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, ‘বিজেপি এক একটা ভোট কিনেছে পাঁচ হাজার টাকায়। রাতের অন্ধকারে সংস্থাগুলি টাকা দিয়ে এসেছে। টাকা কি আকাশ থেকে এসেছে? কোনও যাদুকর দিয়েছে নাকি পি সি সরকার দিয়েছেন? নাকি আল্লা টাকা দাও বলে চাইতেই টাকা এসে গিয়েছে? কোথা থেকে এত টাকা পেল?’ এর পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশের ভূমিকারও সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি কাগজ তো বিজেপির দালাল হয়ে গিয়েছে। ব্ল্যাকমানি নিয়ে কিছু লিখছে না তো!’