মোদী সরকারের অর্থনীতি সংক্রান্ত ভুল পদক্ষেপের ফলে দেশজুড়ে আর্থিক মন্দা এবং অতিরিক্ত করের বোঝা। আর এই জোড়া ধাক্কায় বেসামাল গাড়ি শিল্প। অটোমোবাইল সেক্টরের মন্দার খবর আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। এবার তার চাক্ষুস প্রমাণও মিলছে। চাকরি হারানোর ভয়ে ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে কয়েকজনের আত্মহত্যার খবর। মারুতি সুজুকি থেকে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার অস্থায়ী কর্মী। তবে সর্বমোট সংখ্যাটা হল ২.৩৫ লক্ষ।
ব্যবসা ধাক্কা খাওয়ায় দেশ জুড়ে ২৮৬ জন গাড়ির ডিলার ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। কাজ গিয়েছে প্রায় ৩৫,০০০ মানুষের। ডিলারদের সংগঠন ফেডারেশন অব অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ফাডা) সিইও সহর্ষ দামানির দাবি, বিক্রি কমায় এপ্রিল-জুলাইয়ে চালু ডিলারশিপেও কাজ হারিয়েছেন প্রায় দু’লক্ষ কর্মী। সব মিলিয়ে ২.৩৫ লক্ষ।
বছরের গোড়া থেকেই কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে অটোমোবাইল সেক্টর। দু’চাকা হোক বা চার চাকা কোনও গাড়িই বিকোচ্ছে না। বিশ্বের বৃহত্তম বাইক এবং গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকেও লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে। আর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ভারতের বাজারে। মূলত বিশ্বের বাজারে মন্দার প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। বাজারে চাহিদা একেবারেই তলানিতে। জুলাইয়ের সমীক্ষা বলছে, টানা ন’মাস গাড়ির বিক্রি কমতে কমতে কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। নানা অফার দিয়ে বা গাড়ির দাম লাগাতার কমিয়েও কাজ হচ্ছে না।
শিল্পের দাবি, গত এক বছর ধরে গাড়ির চাহিদা টানা কমছে। তার উপরে কেন্দ্র সম্প্রতি বৈদ্যুতিক গাড়িতে জোর দেওয়ায় পেট্রল ও ডিজেল গাড়ি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ধন্দ তৈরি হয়েছে। যার কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিক্রিতে। আরও দু’টি কারণে গাড়ি কেনা সাময়িক স্থগিত রেখেছেন ক্রেতারা। প্রথমত, অনেকে ভাবছেন জিএসটি কমলে গাড়ির দাম কমবে। দ্বিতীয়ত, ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে শুধুই বিএস-৬ মাপকাঠির গাড়ি তৈরি ও বিক্রি হবে। তার ঠিক আগে সংস্থার ভাঁড়ারে থাকা বিএস-৪ মাপকাঠির গাড়িতে বড় ছাড় মিলতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ, ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে বিএস-৪ গাড়ি বিক্রি বাধ্যতামূলক হওয়ার সময়ে বিএস-৩ গাড়িতে বাড়তি ছাড় দিয়েছিল সংস্থাগুলি।