চলতি মাসের ২৬ তারিখ ছিল শুনানি। সেদিন শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেতে হয় প্রাক্তন অর্থ তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে। আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, তালিকাভুক্তই হয়নি চিদম্বরমের জামিনের মামলা। তাই সেই মামলার শুনানি হওয়া সম্ভব নয়। তবে তার কিছুদিন আগেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের জামিন নাকচ করে দিয়েছিল দিল্লী হাইকোর্ট। আর সেই রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি সুনীল গৌড়। এবার তিনি অবসর নিতেই তাঁকে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল ফর প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের চেয়ারম্যান করে দিল মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে বিধি ভেঙে আইএনএক্স মিডিয়াকে বিদেশি বিনিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বিচারপতি সুনীল গৌড় তাঁর কেস শুনে বলেছিলেন, আইএনএক্স মিডিয়া কেসে চিদম্বরমকেই ‘কিংপিন’ বলে মনে হচ্ছে। একে টাকা তছরুপের ‘ক্ল্যাসিক কেস’ বলা যেতে পারে। পরে তিনি এ-ও বলেন, চিদম্বরমকে জামিন দিলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। এর পাশাপাশি আরও একটি হাই প্রোফাইল কেস শুনেছিলেন বিচারপতি গৌড়। তাতে অভিযুক্ত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ভাইপো রাতুল পুরী। অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারিতে তিনি অন্যতম অভিযুক্ত।
তাঁর আগাম জামিনের আবেদন বিচারপতি গৌড়ের এজলাসে নাকচ হয়ে গিয়েছিল। এমনকী ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বিচারপতি গৌড় সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার নির্দেশ দেন। গত বছর ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রকাশক সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালকে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, অবিলম্বে তাদের দিল্লী অফিস খালি করে দিতে হবে। গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়ের কার্যকরী হওয়া স্থগিত রেখেছে। এছাড়াও তাঁর এজলাসে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতি মামলার শুনানি হয়েছিল। মাংস রপ্তানিকারী মইন কুরেশির বিরুদ্ধে টাকা তছরুপের মামলাও তিনি শুনেছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে তিনি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে কেরিয়ার শুরু করেন গৌড়। দিল্লী হাইয়ার জুডিশিয়াল সার্ভিসে তিনি যোগ দেন ১৯৯৫ সালে। এরপর ২০০৮ সালের এপ্রিলে গৌড় হাইকোর্টের বিচারপতি হন। অবশেষে গত ২৩ আগস্টই অবসর নিয়েছেন তিনি। তবে অবসরের পর চিদম্বরমের জামিন নাকচ করা সেই গৌড়কেই এবার নয়া দায়িত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাকে ভাল চোখে নিচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ।